চট্টগ্রাম : বলিখেলা শেষ হলেও ফুরোয়নি লালদীঘির বৈশাখীমেলা। চলবে আরো অন্তত তিন দিন। গত দু’দিনে বৈশাখীমেলায় শিশু আর বাড়ির ‘বউ-ঝি’দের প্রাধান্য থাকলেও আজ (বৃহস্পতিবার) জমেছে ফার্নিচার-মেলা।
নগরীর সিনেমা প্যালেস মোড়ে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চাঁদপুর ও কুমিল্লাসহ নানা জায়গা থেকে আসা ৫০ টির বেশি দোকানে বিক্রি হচ্ছে অফিসসহ বাসা-বাড়ি, সাজানোর সব ধরনের ফার্নিচার।
আয়োজকরা জানালেন, এই ফার্নিচার-মেলার ঐতিহ্য অনেক পুরোনো। এক সময় স্থানীয়দের চাহিদার কথা মাথায় রেখে ব্যবসায়ীরা ঘরের বিভিন্ন তৈজষপত্র মেলায় নিয়ে আসতো। সময়ের পরিক্রমায় তা বর্তমানে ফার্নিচার-মেলায় রূপ নিয়েছে। প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা নানা ধরনের ফার্নিচার নিয়ে আসেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চট্টগ্রাম নগরীর সিনেমা প্যালেস মোড়ে, নন্দনকানন ফায়ার স্টেশনের সামনেসহ আশপাশের এলাকায় নানা ধরনের ফার্নিচারের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা থেকে শুরু হয়েছে ফার্নিচার মূল্য। চেয়ার, টেবিল থেকে শুরু করে বিভিন্ন আকারের বিছানা, সোফাসেটসহ নানা ধরনের ফার্নিচার দেখা গেছে স্টলগুলোতে। মেলা উপলক্ষে ফার্নিচারের স্টলগুলোতেই চলছে ৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড়। আগত ক্রেতারা সব ফার্নিচারেই এই মূল্যছাড় সুবিধা পাবেন বলেই জানালেন বিক্রেতারা।
ঢাকার জুরাইন থেকে মেলায় ফার্নিচার নিযে আসা আঁখি ফার্নিচারের সত্ত্বাধিকারী আহমেদ হোসেন বাবু জানান, ‘দেশীয় ফার্নিচারের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বেশি। তাই বৈশাখীমেলায় আসা। এ নিয়ে পঞ্চমবারের মত লালদীঘির মেলায় এলাম। তবে মেলায় তেমন বিক্রি নেই। মূলত আজ বিকেলে থেকেই মেলাতে ফার্নিচার বিক্রি শুরু হবে। এখনো সবাই বৈশাখী মেলার কেনাকাটায় ব্যস্ত।’
নগরীর চাঁন্দগাও আবাসিকের বাসিন্দা রিমি-জসিম দম্পতি। সিনেমা প্যালেস মোড়ে ফার্নিচার দেখছিলেন। তারা এ প্রতিবেদককে জানান, ‘দু’জনেই চাকরিজীবী। বিয়ে করেছেন বছর খানেক আগে। কিন্তু এখনো ঘরের অনেক প্রয়োজনীয় ফার্নিচারই কেনা হয়নি। তাই লালদিঘীর মেলায় এসেছেন খাট আর ওয়ারড্রোপ কিনবেন বলে।
স্কুলশিক্ষিকা রিমি একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানে নানা নকশার ফার্নিচার পাওয়া যাচ্ছে। সে অনুপাতে দামটা অনেক কম। কিন্তু টেকসই কেমন হবে সেটাই প্রশ্ন।’
চাঁদুপুর থেকে বিভিন্ন ধরনের খাট ও পালঙ্ক নিয়ে এসেছেন শরিফ ফার্নিচারের সত্ত্বাধিকারী শরিফ মিয়া।
তিনি জানালেন, গতকাল রাতেই তিনি মেলায় এসেছেন। খেলাশেষে মেলায় কেন? প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নের জবাবে শরিফ মিয়া বলেন, “আজইতো ফার্নিচারের মেলা শুরু। এর আগে কেউ কেনে না। কিনলেও নিয়ে যাওয়ার সুযোগ পান না। গত আট বছর ধরে মেলায় আসছি। এখানে ফার্নিচার বিক্রি শুরু হয় খেলার শেষে, চলে পরের তিন থেকে চার দিন।’
নারায়ণগঞ্জ থেকে মেলায় ফার্নিচার নিযে আসা ইয়াসিন টিম্বারের কর্মচারি মোস্তফা একুশে পত্রিকাকে জানান,‘এর আগেরবার ট্রাক থেকে ফার্নিচার নামানোর সুযোগই পাননি তারা। গাড়িতে ফার্নিচার রেখেই বিক্রি করতে হয়েছে। তবে এবার গতকাল রাতে এসেও পুলিশ প্লাজার সামনে একটু জায়গা পেয়েছেন। সকাল থেকে চারটি বড় ফুলের খাট আর একসেট সোফা বিক্রি করেছেন তিনি। দামও ভালো পেয়েছেন।’
একুশে/এএ/এটি