চট্টগ্রাম: ২০২৩ সালের মধ্যে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্রবন্দর চালু করতে কাজ এগিয়ে চলেছে। জাপানের কাশিমা ও নিগাতা (পূর্ব) বন্দরের আদলে মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দর নির্মিত হবে।
সোমবার ‘স্টেকহোল্ডার কনসালটেশন ওয়ার্কশপ অন মাতারবাড়ি পোর্ট ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক কর্মশালায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর জুলফিকার আজিজ এ কথা জানান। কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ট্রেনিং সেন্টারে।
কর্মশালায় জুলফিকার আজিজ বলেন, আমাদের হাতে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল, লালদিয়া ও বে-টার্মিনালের প্রকল্প রয়েছে। এসবের নির্মাণকাজ শেষ হলে আমাদের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। তখন আমরা ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের ৭০ লাখ কনটেইনার হ্যান্ডলিং করতে পারবো। এ মুহূর্তে আমাদের মাত্র ২০ লাখ কনটেইনারের সামান্য বেশি। কিছুদিন আগে আমরা ‘টু মিলিয়ন ক্লাব’-এ নাম লিখিয়েছি।
তিনি বলেন, পূর্বাভাস অনুযায়ী লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে আমাদের মাতারবাড়ি ও পায়রা নিয়ে অগ্রসর হতে হবে। আমাদের আশা ২০২৩ সালের মধ্যে মাতারবাড়িতে নতুন বন্দরের অবকাঠামো গড়ে তুলতে পারব। মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে সড়ক ও রেলপথ সংযোগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
‘মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্পে কয়লা আমদানি ও খালাসের জন্য যে চ্যানেল ও টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে, সে একই চ্যানেল ব্যবহার করে সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করা হবে। মাতারবাড়িতে প্রাথমিকভাবে দুটি টার্মিনাল হবে। সেখানে ৩২০-৩৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের এবং ১৬ মিটার ড্রাফটের ৮ হাজার টিইইউ’স কন্টেইনারবাহী জাহাজ ভিড়তে পারবে।’
সোমবারের অনুষ্ঠানে বন্দরের সদস্য (প্রশাসন ওপরিকল্পনা) মো. জাফর আলম মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দরের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। জাইকা সার্ভে টিমের পাঁচ সদস্য পাঁচটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মাতারবাড়িতে জাপান সরকারের ঋণ সহায়তায় ১২০০ মেগাওয়াট আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফার্য়াড পাওয়ার প্রজেক্ট এবং সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করা হবে। জাপানের কাশিমা ও নিগাতা বন্দরের আদলে নির্মিতব্য মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরটিতে চ্যানেল তৈরির মাধ্যমে বন্দরকে সমুদ্রের সাথে যুক্ত করা হবে।
চ্যানেলে পলি জমা বন্ধে পানি প্রবাহ রোধ করতে নির্মাণ করা হবে ‘ব্রেক ওয়াটার’। এর পরিচালনা ও তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই, ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং এবং অ্যাপ্রাইজাল মিশন সম্পন্ন হয়েছে। চলতি বছরের মে মাসের মধ্যে প্রকল্পের ঋণ নিয়ে আলোচনা এবং জুনের মধ্যে বিস্তারিত নকশার ঋণচুক্তি করা হবে।
প্রসঙ্গত জোয়ার-ভাটা নির্ভর চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে বর্তমানে খোলা পণ্যবাহী মাদার ভ্যাসেল (বড় জাহাজ) ভিড়তে পারে না। গভীর সমুদ্রবন্দর চালু হলে সেখানে বড় জাহাজ থেকে ভিড়তে পারবে।
এসআর/একুশে