আবুল খায়ের গ্রুপের কর্মকর্তা হত্যার প্রধান আসামির স্বীকারোক্তি

চট্টগ্রাম: প্রায় ১৪ মাস আগে চট্টগ্রাম নগরে আবুল খায়ের গ্রুপের এক কর্মকর্তাকে কুপিয়ে খুনের ঘটনার প্রধান আসামি রাকিব বেপারী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

গতকাল শুক্রবার ঢাকার মিরপুর শাহ আলী থানা এলাকা থেকে রাকিব বেপারীকে গ্রেফতারের পর শনিবার তাকে চট্টগ্রামের আদালতে হাজির করে বায়েজিদ বোস্তামী থানার পুলিশ।

এরপর চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম এস এম মাসুদ পারভেজের আদালত রাকিবের জবানবন্দি রেকর্ড করে। জবানবন্দিতে ঘটনার দিনের সব বিবরণ দেওয়ার পাশাপাশি পালিয়ে থাকার দিনগুলোর বিবরণও দিয়েছেন তিনি।

রাকিব বেপারী (২৪) ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ভাষানচর গ্রামের কলম বেপারীর ছেলে। তিনি চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ শিল্প এলাকার আবুল খায়ের কনজিউমার গুডস ডিভিশনে আওলাদ নামের একজন কন্ট্রাক্টরের অধীনে ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতেন।

পুলিশ জানায়, আবুল খায়ের কনজিউমার গুডস ডিভিশনের কারখানায় নির্মাণকাজ তদারকির দায়িত্বে ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির মানবসম্পদ বিভাগের সহকারি ব্যবস্থাপক শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়া। ২০১৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর কাজের মান নিয়ে বাইরের ঠিকাদারের নিয়োজিত শ্রমিকদের বকাঝকা করেন তিনি। এরপর ২৮ ডিসেম্বর সকালে তিনি কারখানায় গেলে ঠিকাদারের অধীনে থাকা চারজন শ্রমিক তাকে কুপিয়ে জখম করেন। প্রথমে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৩১ ডিসেম্বর সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

হামলার ঘটনায় ওই দিনই হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়। এ ঘটনায় চার আসামির মধ্যে আমিন, শাব্বির ও মিঠু নামে তিনজনকে ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু একে একে তিনজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হলেও প্রধান আসামি রাকিব বেপারী গ্রেফতার হচ্ছিল না। যিনি নিজেই ধারালো রাম দা দিয়ে শাহাদাতকে কুপিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে।

চতুর্থ তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে মামলাটির তদন্তভার পান বায়েজিদ বোস্তামী থানার এসআই মোহাম্মদ আইয়ুব উদ্দিন। দায়িত্ব পেয়ে তিনি প্রধান আসামিকে গ্রেফতারে তৎপরতা শুরু করেন।

রাকিবকে গ্রেফতার অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া এসআই মোহাম্মদ আইয়ুব উদ্দিন বলেন, ঘটনার পর থকে ছদ্মনাম ধারণ করে দেশের বিভিন্নস্থানে ভাসমান থেকে আত্মগোপন করে আসছিলেন রাকিব। তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতা নিয়ে তাকে ঢাকার শাহ আলী থানার দক্ষিণ পাশের মেঘনা স্টোর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, জবানবন্দিতে রাকিব জানিয়েছে, শাব্বির, আমিন ও সে আবুল খায়ের গ্রুপের কর্মকর্তা শাহাদাতকে আঘাত করেছে। মিঠু তাদের পেছনে থাকলেও দেরী হওয়ায় সে আঘাত করতে পারেনি। ঘটনার পর পালিয়ে নতুন ব্রীজ এলাকায় একটি মাজারে এক দিন থাকার পর ফরিদপুরে নিজের বাড়িতে চলে যান রাকিব। এরপর থেকে বিভিন্নস্থানে আত্মগোপনে থাকার কথাও জবানবন্দিতে জানায় রাকিব।

এসআর/একুশে