নিজস্ব প্রতিবেদক : `মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা/ অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা…।` বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতি ও গর্বিত ঐতিহ্যের রূপময় ছটায় বৈশাখকে এভাবেই ধরাতলে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। রবির কিরণে হাসি ছড়িয়ে পুরনো বছরের সব গ্লানি, অপ্রাপ্তি, বেদনা ভুলে নব আনন্দে জাগবে গোটা জাতি। আজ পহেলা বৈশাখ। একটি নতুন বছরের শুভ সূচনা। শুভ নববর্ষ। স্বাগত ১৪২৫।
চৈত্রের রুদ্র দিনের পরিসমাপ্তির মাধ্যমে গতকাল শুক্রবার ১৪২৪ সনকে বিদায় জানিয়ে বাংলা বর্ষপঞ্জিতে আজ শনিবার যুক্ত হয়েছে নতুন বছর। আজ পহেলা বৈশাখ। একটি নতুন বছরের শুভ সূচনা। শুভ নববর্ষ। স্বাগত ১৪২৫। জীর্ণ-পুরাতনকে পেছনে ফেলে সম্ভাবনার নতুনকে নানা আয়েজনে স্বগত জানাচ্ছে চট্টগ্রাম।
চট্টগ্রাম নগরীর ডিসি হিল এবং সিআরবির শিরিষ তলায় প্রতিবছরের মতো এবারও চলছে বর্ষবরণের মূল আয়োজন। তবে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে পুরো নগরী এবং জেলার বিভিন্ন স্থানেও চলছে বর্ষবরণ উৎসব। ছোট্ট শিশু, নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ, তরুণ-তরুণী সব বাঙালি যেন নেমে এসেছে উৎসবের টানে।
ডিসি হিলে সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন পরিষদের আয়োজন শুরু হয় শনিবার (১৪ এপ্রিল) সকালে রক্তকরবীর রবীন্দ্রসঙ্গীতের মধ্য দিয়ে। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী শীলা মোমেনের পরিচালনায় শিল্পীরা কয়েকটি গান পরিবেশনের পর শুরু হয় একের পর এক পরিবেশনা। দলীয় গান, নৃত্য, আবৃত্তি চলছে ডিসি হিলের মুক্তমঞ্চে।
নববর্ষ উদযাপন পরিষদ সিআরবির শিরীষতলায় বর্ষবরণের আয়োজন করেছে। ভায়োলিনিস্ট চট্টগ্রাম নামে একটি সংগঠনের শিল্পীদের ভায়োলিন বাদনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় পহেলা বৈশাখের মূল অনুষ্ঠান। এরপর সঙ্গীত ভবন, সুরতীর্থ একাডেমিসহ বিভিন্ন সংগঠন তাদের দলীয় পরিবেশনা নিয়ে আসেন। শিরীষতলার মুক্তমঞ্চেও চলছে গান-নাচসহ বিভিন্ন পরিবেশনা।
বৈশাখী উৎসব ঘিরে মোমিন রোড, নন্দনকানন, আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ সড়ক, চেরাগি পাহাড় এলাকায় বসেছে বৈশাখী মেলা। যাতে মাটির হাঁড়ি-পাতিল, ব্যাংক, শিশুদের খেলনা, মৌসুমি ফল, গহনা, গৃহস্থালি সামগ্রী, পান্তা-ইলিশ, শরবত, আইসক্রিম, বাঁশ-বেত-তালপাতার তৈরি হাতপাখা, প্লাস্টিকের ঢোল, খেলনা, শোপিস, শরবত ডাব, তরমুজ ইত্যাদি বিক্রি হচ্ছে মেলায়।
বর্ষবরণ উৎসবকে ঘিরে তিন স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ। মূল ফটকের আগে দুইটি আর্চওয়ে, ভেতরে ওয়াচ টাওয়ার বসানো হয়েছে। পোশাক পরা নারী ও পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ ও র্য্যব সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
একুশে/এএ