বাসস : অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থান এখন অনেক বেশী সুসংহত ও সুদৃঢ়।
আজ সংসদে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক বাস্তবায়ন অগ্রগতি ও আয়-ব্যয়ের গতিধারা এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক অগ্রযাত্রার এক গুরুত্বপূর্ণ মাইফলক অতিক্রম করেছে। গত ১৬ মার্চে বাংলাদেশ উন্নতশীল দেশে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের স্বীকৃতি পত্র পেয়েছে। এ ঐতিহাসিক অর্জন জাতি হিসেবে বাঙালিদের সক্ষমতা, দৃঢ়তা, সহিষ্ণুতা ও গতিশীলতার স্বীকৃতি।
অর্থমন্ত্রী বলেছেন, চলতি অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট রাজস্ব আহরিত হয়েছে ১ লাখ ৩ হাজার ১৫৮ কোটি টাকা, যা পূর্ববর্তী অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ শতাংশ বেশি এবং বাজেটের লক্ষ্যমাত্রার ৩৫ দশমিক ৮ শতাংশ।
তিনি বলেন, চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মোট রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৮৭ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা (জিডিপি’র ১২ দশমিক ৮ শতাংশ)।
মন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত গত অথবছরের একই সময়ের তুলনায় মোট ব্যয় ৭ দশমিক ৮ শতাংশ এবং অনুন্নয়নসহ অন্যান্য ব্যয় ৮ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে।
মুহিত বলেন, আইএমইডি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী চলতি অর্থবছরে দ্বিতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়িত হয়েছে ৪৪ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা, বিগত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ৩৩ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত এ মন্ত্রণালয়গুলো ৩৫ হাজার ১৮২ কোটি টাকা ব্যয় করেছে, যা মন্ত্রণালয়গুলোর বিপরীতে প্রদত্ত মোট বরাদ্দের ৩১ দশমিক ৩ শতাংশ।
তিনি বলেন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত কোন বাজেট ঘাটতি দেখা দেয়নি, বরং বাজেটে উদ্বৃত্ত হয়েছে ২৩৭ কোটি টাকা, বিগত অর্থবছরে একই সময়ে ঘাটতি ছিল ৬ হাজার ৪৪৪ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় বৈদেশিক ঋণ গ্রহণের পরিমাণ বেড়েছে, তবে অনুদান গ্রহণের পরিমাণ কমেছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমানত ও ঋণের সুদের হারের নি¤œমুখী ধারা বজায় ছিল। দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষে তফসিলি ব্যাংকসমূহের আমানতের সুদের হার (ভারিত গড়) ৪ দশমিক ৯ শতাংশে নেমে আসে, বিগত অর্থবছরের একই সময়ের যা ছিল ৫ দশমিক ২ শতাংশ।
তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়কালে রপ্তানি আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের ১৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তুলনায় ৭ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে ১৭ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে আমাদের রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৩ শতাংশ এসেছে তৈরি পোশাক খাত থেকে।
মুহিত বলেন, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের ন্যায় দ্বিতীয় প্রান্তিকেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের অবস্থান স্বস্তিদায়ক। ২০১৭ সারের ডিসেম্বর শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৩ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, যদিও ছয় বছর পর্যবেক্ষণের পর ২০২৪ সাল নাগাদ বাংলাদেশের চূড়ান্ত উত্তরণ ঘটবে এবং ২০২৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের সুবিধাসমূহ ভোগ করতে পারবে। অতঃপর বিদ্যমান সুবিধা কমলেও নতুন সুবিধার দ্বার উন্মোচিত হবে।