রবিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১

টাকাওয়ালা নয়, নীতিবান ছেলেকে মেয়ের বিয়ে দেয়ার আহ্বান মেয়রের

| প্রকাশিতঃ ২০ মার্চ ২০১৮ | ১২:১৪ পূর্বাহ্ন

উজ্জ্বল দত্ত : মেয়ের বিয়ে দেয়ার সময় আমাদের সমাজে অনেকেই আছেন যারা শুধু ছেলের আয় কত, কেমন টাকাপয়সা আছে-এসব খোঁজখবর নেন। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, পাত্রের কোনো কর্মসংস্থান আছে কিনা তাও পাত্রীপক্ষ অনেক সময় তদন্ত করেন না। যে ছেলের ভাল ইনকাম আছে, টাকাপয়সা আছে-তার কাছেই মেয়েকে পাত্রস্থ করার সিদ্ধান্ত নেন অভিভাবকেরা। এরপর বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই ভাঙন ধরছে সংসারে। ঘটছে বিচ্ছেদের মতো অহরহ ঘটনা।

এ বিচ্ছেদ-বিরহ আমাদের সমাজে বর্তমানে দূরারোগ্য সামাজিক ব্যাধি হিসেবে পরিগণিত হয়ে উঠছে। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের পথ হিসেবে বিয়ের পূর্বে টাকাওয়ালা ছেলের খোঁজ না করে নীতিবান ছেলে দেখে মেয়েকে পাত্রস্থ করার আহ্বান জানিয়েছেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।

সোমবার ২৫নং রামপুর ওয়ার্ডে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকবিরোধী সমাবেশে সিটি মেয়র নগরবাসীর প্রতি এই আহ্বান জানিয়েছেন।

সমাবেশে তিনি বলেন, আমরা মেয়েকে পাত্রস্থ করার সময় শুধু টাকাওয়ালা ছেলে দেখে মেয়ের বিয়ে দিচ্ছি। সম্বন্ধ করছি। শুধু টাকা থাকলেই ছেলে পাশ। তার আর কোনো চরিত্রগুণ বিবেচনা করা হচ্ছে না। ছেলে কীভাবে এত টাকাপয়সার মালিক হল? সে কী কাজ করে? কোনো চাকরি-বাকরি করে কিনা ক্ষেত্রবিশেষে এই পরিচিতিও বাদ দেন অভিভাবক সমাজ। আর বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই “ফুলের মত পবিত্র” সেই ছেলের গুমর ফাঁস হয়ে যায়। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দেখা দেয় ভুল বোঝাবুঝি। বাড়ে পারষ্পরিক দূরত্ব। কাছের মানুষটি আস্তে আস্তে পর হয়ে উঠে। স্বামীর অনৈতিক, অসামাজিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করতে গেলে স্ত্রীকে নানাভাবে পর্যুদস্ত করে তার দুরাচারী স্বামী। অনেক সময় প্রিয় স্বামীর গোপন সন্ত্রাসী কার্যক্রম বা মাদকব্যবসার প্রতিবাদ করতে গিয়ে স্ত্রীকে প্রতিনিয়ত নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। এমনিভাবে ধীরে ধীরে মধুর দাম্পত্য সম্পর্ক একদিন বিষাদে পর্যবসিত হয়। ঘটে বিবাহ বিচ্ছেদ।

সিটি করপোরেশনে প্রতিদিন শত শত বিবাহ বিচ্ছেদ হচ্ছে জানিয়ে মেয়র বলেন, এ নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট মহোদয় আমার সাথে আলোচনা করেন। আমি উনাদেরকে বলি- পারলে দু’পক্ষকে রাজি করিয়ে বিচ্ছেদ না করিয়ে আবার বন্ধনে আবদ্ধ করে দেন। কিন্তু এ সমস্যা তো এভাবে সমাধানের নয়।

এ সমস্যা সমাধান করতে হলে আমাদেরকে সামাজিকভাবেই এর প্রতিরোধ করতে হবে। সচেতন হতে হবে। বিয়ে দেয়ার আগে পাত্রের সম্যক খোঁজ খবর নিতে হবে। ছেলে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত কিনা? মাদক সেবন বা বেচাকেনার সাথে জড়িত কিনা অথবা কোনো অসামাজিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত কিনা এসব খোঁজ খবর নিতে হবে।