আবু আজাদ : নীল নবঘনে আষাঢ় গগনে তিল ঠাঁই আর নাহি রে/ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে / বাদলের ধারা ঝরে ঝরো-ঝরো, আউষের ক্ষেত জলে ভরো-ভরো / কালিমাখা মেঘে ও পারে আঁধার ঘনিয়েছে দেখ্ চাহিরে / ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে।
যদিও আজ ভেজা আষাঢ় নয়, খটখটে চৈত্র। তবুও রবি ঠাকুরের এ কবিতা আজ বন্দরনগরীর বাসিন্দাদের মন ছুঁয়ে যেতেই পারে। সত্যিই তিল ধারনের ঠাঁই নেই ওই নীল আকাশের। মমতাময়ি আজ আপনার পথ আগলে বলতেই পারেন ‘ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে ….’
বৃষ্টি নিয়ে আসা এই মেঘের নাম ‘কিউমুলোনিম্বাস’। এটি ল্যাটিন শব্দ। বাংলায় যাকে বলে উলম্ব বা নীরদ মেঘ। বঙ্গোপসাগর ও চট্টগ্রামের ভূ-ভাগে একটা স্বাভাবিক মৌসুমি লঘুচাপ আছে। গত কিছু দিনে প্রচুর জলীয়বাষ্প আকাশে উঠেছে, সেই জলীয় বাষ্পই আকাশে আছে জমা হয়ে। তাই বলা যায় ঝড় আসন্ন।
শীত শেষে আজ চৈত্র মাসের দ্বিতীয় দিন। কিন্তু দিনভর মেঘে ঢাকা নগরীতে মনে হচ্ছে যেন আবারও শীত ফিরে এসেছে। বৃষ্টির পূর্বাভাস আগে দেওয়া হয়েছিলো। পূর্বাভাসকে সত্যি করে গতকাল রাতে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ঝড়েছিলো। তবে আবহাওয়া অফিস বলছে, বিকেলে বৃষ্টি হবে, এবং এটা যে সে বৃষ্টি না, শিলা বৃষ্টি … সঙ্গে বজ্রপাতও।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা শেখ হারুনুর রশিদ একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে চট্টগ্রাম ও পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোর কোথাও কোথাও মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। বিকেল চারটা থেকে আটটার মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীতে বৃস্টির সম্ভাবনা রয়েছে। শুক্রবার বেলা ১২টা পর্যন্ত গত তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের চাইতে কম।’
এদিকে আকাশে মেঘ দেখে অনেককে ছাতা মাথায় বাইরে বের হতে দেখা গেছে। তবে ছুটির দিন হওয়া নগরী রাস্তাঘাট এক প্রকার ফাঁকাই বলা চলে। যে কারণে যানজটের ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি যাত্রীদের।
সকালে নগরের আন্দরকিল্লা গিয়ে দেখা গেছে, সড়কে তেমন কোনও যানবাহন নেই। ফাঁকা রাস্তায় রিকশা, লেগুনা, ব্যক্তিগত গাড়ি ও কিছু গণপরিবহন চলছে। এসব পরিবহনেও যাত্রীদের উপস্থিতি কম ছিল। চালকের সহযোগীরা ডেকে ডেকে পরিবহনে যাত্রী তোলার চেষ্টা করছেন।
চকবাজারের একটি বেসরকারি কোম্পানির কর্মকর্তা নাজমা আক্তার বলেন, ‘ভালোই লাগছে। কারণ রাস্তায় যানজট নেই। রিকশায় করে ফাঁকা রাস্তায় অফিসে পৌঁছাতে বেশি সময় লাগবে না। যখন যানজট দেখা দেয় তখনই ভোগান্তি হয়।’
একুশে/এএ