ঢাকা : ফের রক্তাক্ত ফ্রান্স। সর্বত্রই আহাজারি-আতঙ্ক-চিৎকার- ছুটাছুটি। এবার বাস্তিল উৎসবে জনতার ভিড়ে বারুদবোঝাই ট্রাক তুলে দিয়ে সন্ত্রাসীরা হত্যা করলো অন্তত ৮০ জনকে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলীয় নিস শহরে এই হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়।ট্রাক চালক পালানোর সময় গুলিতে নিহত হন। পরে ট্র্রাকের ভেতর থেকে বেশ কয়েকটি গ্রেনেডে ও বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়। নিহতদের মধ্যে অনেক শিশু ও নারী রয়েছেন।এ ঘটনায় আরো বহু লোক আহত হয়েছে।ঘটনার পর সর্বত্র নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।হামলাকারী তিউনিশীয় বংশোদ্ভূত ফরাসী নাগরিক।
একজন পুলিশ বলেছেন, আহতদের সংখ্যা অর্ধ শতাধিক হবে।দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এটি একটি সন্ত্রাসী হামলা।এর আগে গত বছর নভেম্বরে দেশটির একাধিক স্থানে সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ১৩০ জন আহত হয়। ঐ ঘটনার পর এটাই সবচেয়ে বড় জঙ্গি হামলা ফ্রান্সে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলের নিস শহরে যখন বাস্তিল দিবস উপলক্ষে একটি আতশবাজি প্রদর্শনী চলছিল, তখন বহু মানুষের একটি ভিড়ের উপর সজোরে বারুদবোঝাই ট্রাকটি উঠিয়ে দেয়া হয়। এসময় মানুষ বিশালাকার লরি-টাইপের ট্রাকের চাকায় নিচে পড়ে একের পর এক মানুষ প্রাণ হারাতে থাকেন। একই সঙ্গে গুলির ঘটনাও ঘটতে থাকে। গুলিতেও অনেকে প্রাণ হারান। টুইটারের কয়েকটি ছবিতে দেখা যায় যে, অসংখ্য মানুষ রাস্তার উপর পড়ে রয়েছে।মুহূর্তে ঐ এলাকা রক্তে ভেসে যায়।
এই ঘটনাকে একটি ‘সন্ত্রাসীহামলা’ বলে বর্ণনা করছে শহরটির কর্তৃপক্ষ। তারা বাসিন্দাদের ঘরে থাকার জন্যেও অনুরোধ করেছে।
নিস শহরের প্রসিকিউটরদের উদ্ধৃত করে ফরাসি গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে যে, সেখানে অন্তত ৮০ জন নিহত হয়েছে এবং শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে। নিস শহরের মেয়র ক্রিশ্চিয়ান এস্ট্রোসি নিশ্চিত করে বলেছেন, একজন লরি চালক কয়েক ডজন মানুষ হত্যা করেছে।
ফ্রান্সের গণমাধ্যমের কাছে প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজন দাবি করেছেন, সেখানে তারা গুলির শব্দও শুনতে পেয়েছেন। যদিও এই তথ্য যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
শহরটির একজন বাসিন্দা বলছেন, আমরা কয়েকটি গুলির শব্দও শুনতে পাই। প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম যে, সেগুলো হয়তো আতশবাজির শব্দ। কিন্তু সবাইকে দৌড়ে পালাতে দেখে আমরাও আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। পরে আমরা একটি হোটেলে আশ্রয় নেই।
সামাজিকমাধ্যমে এই ঘটনার বেশ কয়েকটি ছবি প্রকাশ হয়েছে। তাতে দেখা যায়, অসংখ্য মানুষ আতঙ্কিত মুখে শহরের রাস্তা ধরে ছুটে পালাচ্ছে। ঘাতক ট্রাকচালককেও পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন। তবে তার পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
এ ঘটনার পর সংকটকালীন জরুরি বৈঠক ডেকেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদ।
গতবছর প্যারিসে সন্ত্রাসীহামলায় বহু হতাহতের ঘটনার পর থেকেই দেশটিতে জরুরি অবস্থা রয়েছে, তার মধ্যেই এই ঘটনা ঘটলো। বাস্তিল দুর্গ পতনের দিবস হিসেবে ফ্রান্সে জাতীয়ভাবে দিনটি পালন করা হয়, এই উপলক্ষেই শহরটিতে নানা অনুষ্ঠান চলছিল।