রূপা ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ৪ জনের ফাঁসি

টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে জাকিয়া সুলতানা রূপাকে গণধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ৪ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া একজনকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

সোমবার টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে থাকা প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবুল মনসুর মিয়ার আদালতে এ রায় ঘোষণা করা হয়।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- বাসটির হেলপার শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীর (১৯) এবং চালক হাবিবুর (৪৫)। এছাড়া সুপারভাইজার সফর আলীকে (৫৫) সাত বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন বিচারক।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট নাছিমুল আক্তার নাসিম। তার সহায়তায় রয়েছেন মানবাধিকার কমিশনের আইনজীবী এস আকবর খান, মানবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট এমএ করিম মিয়া ও মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আজাদ।

আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবী শামীম চৌধুরী দয়াল ও দেলোয়ার হোসেন।

টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি এ কে এম নাছিমুল আখতার নাসিম জানান, ঘটনার ১৭৩ দিন আর মামলার ১৭১ দিনের মাথায় আলোচিত এই মামলার রায় হল।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রূপাকে চলন্ত বাসে গণধর্ষণ করে পরিবহণ শ্রমিকরা। পরে বাসেই তাকে হত্যার পর মধুপুর উপজেলায় পঁচিশ মাইল এলাকায় বনের মধ্যে তার মরদেহ ফেলে রেখে যায়। এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ওই রাতেই অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে তার মরদেহ উদ্ধার করে। পরদিন ময়নাতদন্ত শেষে রূপার মরদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মধুপুর থানায় হত্যা মামলা করে। পরে পত্রিকায় প্রকাশিত ছবি দেখে তার ভাই হাফিজুর রহমান মধুপুর থানায় গিয়ে তার বোনকে শনাক্ত করেন।

২৮ আগস্ট ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ময়মনসিংহ-বগুড়া সড়কে চলাচল করা ছোঁয়া পরিবহনের হেলপার শামীম, আকরাম, জাহাঙ্গীর, চালক হাবিবুর এবং সুপারভাইজার সফর আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত ১৫ অক্টোবর এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে পাঁচ আসামির বিরূদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

অভিযোগপত্র দাখিলের পরদিন ১৬ অক্টোবর মামলাটি বিচারের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বদলি করা হয়। গত ২৫ অক্টোবর আদালত এ অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন।