ঢাকা: দুর্নীতি মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার সাজা হলে তিনি নির্বাচনে অযোগ্য হবেন কী না?
এ বিষয়ে সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহ্দীন মালিক বলেন, ‘নিম্ন আদালতে সাজা হলেই কেউ নির্বাচন করতে পারবেন কি–না, বিষয়টি আসলে আমাদের আইনে স্পষ্ট নয়। নিম্ন আদালতে খালেদা জিয়ার সাজা হলে তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করবেন, এটা স্বাভাবিক। উচ্চ আদালত যদি নিম্ন আদালতের রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ না দেয় এবং আপিল বিচারাধীন থাকলে আইনের স্বাভাবিক হিসাব বলে–কারাগারে থেকেই তিনি নির্বাচন করতে পারবেন। আর উচ্চ আদালত যদি তার আপিল খারিজ করেন তাহলে অন্য কথা।’
‘তাছাড়া উচ্চ আদালতের ইদানীং কিছু রায়ে বিষয়গুলো নিয়ে অস্পষ্টতা দেখা দিয়েছে। যেমন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার সাজা হয়েছিল। হাইকোর্ট তার আপিল খারিজ করে দেয়, এরপর আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ খারিজ করে নতুন করে শুনানির নির্দেশ দেয়। এর অর্থ হচ্ছে, মামলাটি এখনো হাইকোর্টে বিচারাধীন। কিন্তু মায়ার মন্ত্রিত্ব কিংবা সংসদ সদস্য পদ তো যায়নি। আপিল করা অবস্থায় তিনি সংসদ সদস্য পদে বহাল আছেন। কাজেই এখানে মন্ত্রী মায়ার বিষয়টি একটি উদাহরণ হয়ে থাকছে। এই উদাহরণ ধরে এটা বলা যায়, উচ্চ আদালতে আপিল থাকলে কেউ নির্বাচনে অযোগ্য হওয়ার কথা নয়।’
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের (২) (ঘ) উপ–অনুচ্ছেদে সংসদে নির্বাচিত হওয়ার যোগ্যতা ও অযোগ্যতার বিষয়ে বলা আছে। এ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অন্যূন দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তাহার মুক্তি লাভের পর পাঁচ বছরকাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে’ তাহলে তিনি নির্বাচিত হওয়ার অযোগ্য হবেন। তবে উচ্চ আদালতে আপিল আবেদন গৃহীত হলে উচ্চ আদালত সাজা পরিবর্তন ও রায় স্থগিত করতে পারেন।’
‘সে ক্ষেত্রেও নিম্ন আদালতে সাজা প্রাপ্ত ব্যক্তি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। যার উদাহরণ–আওয়ামী লীগ নেতা ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীর, বিএনপির লুৎফুজ্জামান বাবরসহ কয়েকজন দুর্নীতির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েও আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালত থেকে অনুমতি নিয়ে ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন।’