ঢাকা: ভাইরাস ‘জ্বরে’ আক্রান্ত বিশ্ব। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিত্য নতুন ভাইরাসের সঙ্গে আবিষ্কার হচ্ছে অত্যাধুনিক কম্পিউটার সিকিউরিটি। কিন্তু আরও এক ধাপ এগিয়ে বেশ কিছু ভাইরাসের ম্যালওয়ার। সিকিউরিটি যতই শক্তিশালী হোক, সব ছত্রভঙ্গ করে দিচ্ছে এসব ভাইরাস। ভাইরাসের আক্রান্তে ক্ষতি হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। এমনি সব ভাইরাসের আতঙ্কে রাষ্ট্র থেকে আমজনতা। জেনে নিন কম্পিউটার জগতে এমন কিছু বিপজ্জনক ভাইরাসের কথা।
জিউস: ২০০৭ সালে জিউস ম্যালওয়ারের খোঁজ মেলে। কম্পিউটারে এই ভাইরাস ইনস্টল হলে আপনা আপনি ইন্টারনেট থেকে আপডেট নিতে থাকে। সাইবার ক্রাইমের দুনিয়ায় এই ভাইরাস ভয়ঙ্কর। ব্যাঙ্ক বা বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ নথি চুরি করার ক্ষমতা রয়েছে এই ভাইরাসের। সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০০৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৭০ হাজার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আক্রান্ত হয়েছে। এমন কী জিউসের নজরে নাসাও বাদ যায়নি।
জিউস গেমওভার: জিউস পরিবারের এক সদস্য জিউস গেমওভার। এই ম্যালওয়ারও বাণিজ্যিক সফটওয়ারগুলিতে প্রভাবিত করে। ক্রেডিট কার্ড নম্বর, পাসওয়ার্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি করতে ওস্তাদ জিউস গেমওভার। বিশ্বের এক লক্ষ কম্পিউটা আক্রান্ত জিউস গেমসওভার ভাইরাসে।
কনফিকার: ২০০৮ সালে প্রথম লক্ষ্য করা যায় কনফিকার ভাইরাসকে। সাধারণত উইনডোজ অপারেটিং সিস্টেমকে ক্ষতি করে। এমন কী কম্পিউটারে অ্যান্টি ভাইরাস থাকলেও তাকে ডিজেবল করে খুব সহজেই বাসা বাঁধতে পারে।
ক্রাইপ্টোলকার: খুব পরিচিত ম্যালওয়ার ক্রাইপ্টোলকার। কম্পিউটারে এই ভাইরাস ঢুকলে সিস্টেম লক করে দেয়। যতক্ষণ না ক্রাইপ্টোলকারের অরজিনাল সিরিয়াল কি দেয়া হচ্ছে সিস্টেম খোলা যাবে না।
কোয়াকবট: পাসওয়ার্ড চুরি করার জুরি নেই কোয়াকবটের। ২০১১ সালে খোঁজ মেলে এই ভাইরাসের। নেটব্যাঙ্কিং, কম্পিউটার লগইনের মতো মূল্যবান পাসওয়ার্ড চুরি করার ক্ষমতা রাখে কোয়াকবট।
সাইকিপট: সাইকিপট এক প্রকার ট্রোজান হর্স ভাইরাস। ২০০৭ সালে এই ভাইরাস ধরা পড়ে। পাসওয়ার্ড সম্পর্কিত তথ্য চুরি করার দুরন্ত ক্ষমতা রয়েছে সাইকিপটের।
স্যান্ডওয়ার্ম- সম্প্রতি স্যান্ডওয়ার্মের খোঁজ পাওয়া গেলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন ২০০৯ সাল থেকেই এর অস্তিত্ব রয়েছে। সাধারণত মাইক্রোসফ্ট ওয়ার্ড ও অ্যাডব সফটওয়ারে ক্ষতি করে থাকে।
স্যান্ডওয়ার্ম: সম্প্রতি স্যান্ডওয়ার্মের খোঁজ পাওয়া গেলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন ২০০৯ সাল থেকেই এর অস্তিত্ব রয়েছে। সাধারণত মাইক্রোসফ্ট ওয়ার্ড ও অ্যাডব সফটওয়ারে ক্ষতি করে থাকে।
ব্ল্যাকপস: উইনডোজ অপারেটিং পয়েন্ট অফ সেল (পিওএস) সিস্টেমে যদি ক্রেডিট ও ডেভিট কার্ড ব্যবহার করা হয়, তার তথ্য খুব সহজেই চুরি করতে পারে ব্ল্যাকপস।
কলার: অ্যান্ড্রয়েড ট্রোজান ভাইরাস এটি। ২০১৪ সালে সনাক্ত করা যায়। মোবাইলে ব্রাউজিং করার সময় অনায়াসে ঢুকে যেতে পারে কোলার ভাইরাস। পর্নোগ্রাফি ওয়েবসাইট থেকে আসার সম্ভবনা থাকে বেশি।
আইলাভইউ: নাম আইলাভইউ হলেও কাজে কিন্তু ভয়ঙ্কর। এই ভাইরাস আক্রান্ত হলে পুরোপুরি কম্পিউটার বিকল করে দেয়। দেখা গেছে সারা বিশ্বে আইলাভইউ ভাইরাসে কম্পিউটার আক্রান্ত হয়ে প্রায় এক হাজার কোটি ডলার গচ্চা দিতে হয়েছে।
কোড রেড: ২০০১ সালে সনাক্ত হয় কোড রেড ভাইরাস। ইআই ডিজিটাল সিকিউরিটির দুই কর্মী এই ভাইরাসের সন্ধান পায়। কম্পিউটারে মেমরি ক্ষতি করে এই ভাইরাস।
মেলিসা: ১৯৯৯ সালে ডেভিড এল স্মিথ মেলিসা ভাইরাস তৈরি করেন। ওয়ার্ড ডকুমেন্টের ক্ষতি করে এটি।
স্টাক্সনেট: সাইবার যুদ্ধে অন্যতম অস্ত্র স্টাক্সনেট ভাইরাস। মনে করা হয়, আমেরিকা ও ইজরায়েল ডিফেন্সের যৌথ উদ্যোগে এই ভাইরাস তৈরি করা হয়েছিল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে বানচাল করার জন্য। যদিও সরকারিভাবে বিষয়ে কোনও তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
মাইডুম: আইলাভইউ ভাইরাস আসার আগে মাইডুম ছিল জনপ্রিয় ইমেল ভাইরাস। উইনডোজ কম্পিউটারেরই সাধারণত ক্ষতি করে।
ফ্ল্যাশব্যাক: ফ্ল্যাশব্যাক একটি ট্রোজান ভাইরাস সাধারণত ম্যাক অপারেটিং সিস্টেমের ক্ষতি করে। ২০১৪ সালে ২২ হাজার ম্যাক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফ্ল্যাশব্যাক আক্রমণে।