আজাদ তালুকদার, মালয়েশিয়া : চেক রিপাবলিক সেন্ট্রাল ইউরোপের একটি দেশ।আয়তন ৭৮৮৬৬ বর্গ কিলোমিটার।অস্ট্রিয়া, জার্মানি, পোল্যান্ড এবং স্লোভাকিয়া আশপাশের দেশ। দেশটি ২০০৪ সালে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অধিভুক্ত হয় এবং ২০০৭ সালে সেনজেন স্টেইটে নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করে। দেশটির রাজধানী প্রাগ-এ থাকেন প্রেমিক দম্পতি জান অ্যাডামস-ক্লারা স্ট্র্যাকোভা। ৮ বছর ধরে ধুন্ধুমার প্রেম তাদের। থাকেন একসঙ্গে, এক ছাদের নিচে স্বামী-স্ত্রীর মতো। রেজিস্ট্রি কোনো কাগজ কিংবা চুক্তি নয়, মনের চুক্তি, হৃদয়ের বাধনই তাদের একসাথে থাকার বড় চুক্তি। জান আর্কিটেকচার, ক্লারা একটি সুপার মার্কেটের সেলসম্যান। কর্মস্থলের ৮ ঘণ্টা সময়টুকু ছাড়া বাকি সময় হাতে হাত ধরে থাকেন তারা।
জীবন একটাই। আর সেই জীবন যদি প্রেমময় না হয় তাহলে কী মূল্য সে জীবনের! তাই তারা জীবনটাকে উপভোগ করতে চান প্রেমে প্রেমে। ৫ বছর পর বাচ্চা নেবেন তারা। তার আগেই বিশ্বটা মুঠোবন্দী করতে চান প্রেম-রোমাঞ্চের দ্যুতি ছড়িয়ে।তারই অংশ মালয়েশিয়া ভ্রমণ। সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, পুকেট মিলিয়ে টানা ৩০ দিনের ট্যুর।
মালয়েশিয়ার কেএলসিসি সেন্ট্রাল পার্কে বসে রোমাঞ্চকর কিছু সময় পার করছিলেন তারা। ঈদের দিন সেখানেই কথা হয় তাদের সাথে।
আজ মুসলমানদের ঈদ জানেন তারা।টানা ৩০ দিন সংযমের পর ঈদ আসে বলে ঈদ উদযাপনকরীদের প্রতি একটা শ্রদ্ধার জায়গা আছে তাদের অন্তরে। পবিত্র কোরআনের ১০ পাতা, আর বাইবেলের ১৫ পাতা পড়ে মর্মার্থ বোঝার চেষ্টা করেছেন অ্যাডামস।
তার মতে, সিমিলারিটি আছে দুই ধর্মের। নিজে কোনো ধর্মে বিশ্বাসী না হলেও ধর্ম ও ধর্মপালনকারীদের প্রতি শ্রদ্ধার কমতি নেই তার। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ইসলাম ধর্মের অপব্যবহার করে বিশ্বজুড়ে যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে তাতে উৎকণ্ঠিত অ্যাডামস।
বাংলাদেশকে চিনতেন না তারা। কদিন আগে ঘটে যাওয়া গুলশান জিম্মি ঘটনার পর বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো চিনেছেন এই দম্পতি।বাংলাদেশকে চেনার বহু ইতিবাচক অর্জন থাকলেও একটি বর্বর সন্ত্রাসী হামলার পর বিশ্বের যারা বাংলাদেশকে চিনেন না, তারাও নতুন করে চিনলেন, জানলেন। তার মতে, বিদেশি নাগরিক হত্যার শিকার হওয়ায় সারা বিশ্বকে নাড়া দিয়েছে এই ঘটনা।
তাদের বলি, বোঝাই- ভাই, আমার স্বদেশের চেহারা এমন নয়, কোনোভাবেই কুৎসিত নয় আমার ধর্মের চেহারাসৌষ্ঠব। এই বিচ্ছিন্নতাবাদীরা নিশ্চয় পরাভুত হবে। এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। জান অ্যাডামস-ক্লারা দম্পতি আস্থা রাখলেন আমার কথায়। আমার সাথে সুর মিলিয়ে তারাও বললেন, এগিয়ে যাক বাংলাদেশ, এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।