ঢাকা: গুলশানে ঘটে যাওয়া জঙ্গি হামলা মোকাবেলায় সরকার ব্যর্থ এমন দাবি করে সরকারের পদত্যাগ চেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এ সময় জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিশিষ্ট নাগরিক ও কূটনীতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বিএনপি চেয়ারপরসন এসব কথা বলেন।
গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় কমান্ডো অভিযান চালাতে দেরি হয়েছে অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, অভিযানে যাওয়ার আগেই সব শেষ হয়ে গেছে। এত দেরিতে কেন অভিযান চালানো হলো প্রশ্ন করেন খালেদা।
এর আগে তিনি ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তি ও দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলা চালিয়ে দেশি-বিদেশি নাগরিকদের জিম্মি করে সন্ত্রাসীরা। দীর্ঘ ১২ ঘণ্টা পর ওই রেস্তোরাঁয় কমান্ডো অভিযান চালানো হয়। কিন্তু তার আগেই ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। অভিযানে ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
অভিযানের জন্য কেন সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করা হয়েছে-সে প্রশ্ন তুলে খালেদা জিয়া বলেন, ‘ভোরে আমরা কী দেখলাম? মৃত মানুষকেই দেখলাম। আমরাতো কোনো কিছু দেখি নাই যে, বিরাট অপারেশন করে বিরাট একটা সাকসেসফুল করে ফেলেছে।’
তিনি দাবি করেন, ‘এটা সরকারের গাফেলতি বা ব্যর্থতা। সরকারের অযোগ্যতার কারণেই এটি হয়েছে। সরকার আজ পর্যন্ত কোনো ঘটনাই ঠিকমতো মোকাবিলা করতে পারেনি। ’
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইনের শাসন ও গণতন্ত্রের অভাবে দেশে একের পর এক জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটছে। প্রথম থেকেই সরকার ব্যর্থ। সরকারের উচিত ব্যর্থতার দায় নিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করে ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়া।
বর্তমান পরিস্থিতিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, এখন প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ হওয়া। এই সব নৃশংস ঘটনাগুলো বন্ধ হওয়া দরকার। এক্ষেত্রে সরকারেরই দায়িত্ব বেশি। কিন্তু তারা মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার বদলে ‘ব্লেম গেম’ করছে। সত্যিকার যারা অপরাধী তাদের ধরা হচ্ছে না। সত্যিকার অপরাধীদের না ধরলে এ ধরনের ঘটনা আরো ঘটবে। এসব মোকাবিলা করার প্রস্তুতি সরকারের আছে কি না, সেটি দেখা দরকার।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হান্নান শাহ, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।
ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে প্রথমে খালেদা জিয়া বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর এবং পরে বনানীতে ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর কবর জিয়ারত করেন।