সদরঘাট থানা কেন জঙ্গিদের টার্গেট?

একুশে প্রতিবেদক : দুই জঙ্গিকে গ্রেফতারের পর চট্টগ্রামের পুলিশ জানতে পেরেছে, নগরের সদরঘাট থানাকে হামলার লক্ষ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছিল জঙ্গিরা। সদরঘাট থানাকে লক্ষ্য হিসেবে চিহ্নিত করার কারণ কী হতে পারে?

জঙ্গিবাদের উত্থানের পর থেকেই থানা ও আদালত ছাড়াও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান সব সময়ই জঙ্গি হামলার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হিসেবে আক্রান্ত হয়েছে। এ ছাড়া সদরঘাট থানার বর্তমান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মর্জিনা আক্তার নামের একজন নারী। জঙ্গিরা নারী নেতৃত্ব মানতে চায় না। সে হিসেবে ‘খোলা চোখে’ এটি একটি কারণ মনে হলেও নেপথ্যে ভিন্ন কিছু রয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, সদরঘাট থানাকে টার্গেট করার অনেকগুলো কারণ হতে পারে। মূল সড়কের পাশেই থানার অবস্থান হওয়ায় যাতায়াত সুবিধা ও সদরঘাট থানায় ভবন না থাকায় অন্য থানাগুলোর চেয়ে কম নিরাপদ- এসব বিষয় জঙ্গিরা খেয়াল করেছে। এছাড়া থানার ভেতরে স্থাপিত ট্রাফিক পুলিশের কার্যালয় ও মসজিদে অবাধ যাতায়াত সুবিধা রয়েছে।

এ ছাড়া অভিযোগ আছে, ট্রাফিক পুলিশের তত্বাবধানে থানার পাশেই ক্যান্টিন, মোবাইল রিচার্জ-বিকাশ এর দোকান খোলা হয়েছে। সেখানেও যে কেউ যাওয়া-আসা করতে পারে সহজেই। সদরঘাট থানার আশপাশের এসব স্থাপনা, নিরাপত্তা দূর্বলতা লক্ষ্য করেছে জঙ্গিরা।

সদরঘাট থানার ওসি মর্জিনা আক্তার বলেন, ‘জঙ্গিরা তো সবসময় সুযোগ খুঁজে সরকারি যে কোন একটা স্থাপনায় আঘাত করে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে। কিন্তু তাদের সে ঘৃণ্য পরিকল্পনা পুলিশ ভণ্ডুল করে দিয়েছে। এখন থানার নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে।’

সদরঘাট থানাকে টার্গেট করার কারণ প্রসঙ্গে ওসি মর্জিনা বলেন, ‘আমার থানার পাশেই ট্রাফিক পুলিশের অফিস। সেখানে কাজের জন্য চালক-হেল্পারসহ অনেক ধরনের মানুষ আসে। এছাড়া মসজিদ থাকায় নামাজ পড়ার অজুহাতে থানায় সহজে প্রবেশ করতে পারে যে কেউ। হয়তো তারা এসব বিষয় খেয়াল করেছে।’

নিরাপত্তা দূর্বলতার এসব দিক তুলে ধরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনেক আগেই ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন বলেও জানান সদরঘাট থানার ওসি মর্জিনা আক্তার।

এর আগে সোমবার গভীর রাতে চট্টগ্রাম নগরের সদরঘাট এলাকার মাদারবাড়িতে একটি বহুতল ভবনে অভিযান চালিয়ে দুই জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশ। তারা হলেন ময়মনসিংহের আশফাকুর রহমান (২১) ও কুমিল্লার মুরাদনগরের রাকিবুল হাসান (১৯)।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার এ এফ এম হুমায়ূন কবির বলেন, ‘ওই বাসা থেকে ১০টি গ্রেনেড ও ২টি সুইসাইডাল ভেস্ট উদ্ধার করা হয়। আশফাকুর ও রাকিবুল দুই মাস আগে বাসাটি ভাড়া নিয়েছিলেন। তারা নিজেদের নব্য জেএমবির সদস্য বলে দাবি করেছেন।’