পুলিশের ‘ঘনিষ্ঠ’ কে এই মাস্তান মামা?

শরীফুল রুকন : পুলিশ প্রশাসনে একটি পরিচিত নাম- মাস্তান মামা। চট্টগ্রামে পুলিশের ছোট-বড় প্রায় সব অনুষ্ঠানে মাস্তান মামার দেখা মেলে। এই ব্যক্তিকে নিয়ে অনেকেরই কৌতূহল রয়েছে। তিনি কোথায় থাকেন? তার আয়ের উৎস কী? পুলিশের বড় কর্তাদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণ কী? আর ‘মাস্তান মামা’ নামে পরিচিতি পাওয়ার রহস্যটাই বা কী?

মাস্তান মামা নামে ব্যাপক পরিচিতি পাওয়া ওই ব্যক্তির প্রকৃত নাম মোহাম্মদ এয়াকুব। পরবর্তীতে নামের সঙ্গে ‘মাস্তান আল চিশতি’ যোগ করেছেন তিনি। মাস্তান শব্দটি দিয়ে ‘দরবেশ’ বোঝানো হয় আর তিনি হলেন চিশতি ধারার অনুসারী। কিছু পোস্টারে নিজেকে চিশতিয়া পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন মোহাম্মদ এয়াকুব মাস্তান আল চিশতি।

বর্তমানে ডবলমুরিং থানার এক্সেস রোডে বেপারীপাড়ার গোল্ডেন টাচ কমিউনিটি সেন্টারের সামনে একটি বাসায় বসবাস করেন মাস্তান মামা। গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বরুমছড়া খাজানগর এলাকায়।

চট্টগ্রামের পুলিশ প্রশাসনে কর্মরত অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে মাস্তান মামার ‘ঘনিষ্ঠ’ সম্পর্ক রয়েছে। যার কারণে চট্টগ্রামে পুলিশের সব অনুষ্ঠানেই দাওয়াত পান তিনি। এমনকি মাস্তান মামার জন্য অনেক অনুষ্ঠানে আলাদা আসন পর্যন্ত বরাদ্দ থাকে। পুলিশের কাছে কেনই বা তিনি এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন?- সে ব্যাপারে জানতে চাইলে মাঠপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তারা সহজেই মুখ খুলতে চান না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রথমদিকে পুলিশ প্রধান একেএম শহীদুল হক স্যারের সাথে তার সুসম্পর্ক রয়েছে- এমন দাবি করতেন মাস্তান মামা। মাঠপর্যায়ের পুরোনো কর্মকর্তারা মাস্তান মামাকে দেখলেই নানা সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করতেন। এতে নবীন কর্মকর্তারা প্রভাবিত হন। এখন তো সবাই সব বুঝেন।’

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের জনসংযোগ শাখা সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে মাস্তান মামার নামে চিঠি ইস্যু করা হয়। এই চিঠিতে প্রাপকের নাম লেখা হয় ‘মাস্তান মামা’। তবে জনসংযোগ শাখায় মাস্তান মামার বাসার ঠিকানা উল্লেখ নেই। ডবলমুরিং থানার মাধ্যমে ওই চিঠি পাঠানো হয়।

এদিকে গত বছরের ২১ ডিসেম্বর চারটি ছবি শেয়ার করে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) রেজাউল মাসুদ। এর মধ্যে একটি ছবিতে দেখা যায়, চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নূরেআলম মিনা ফুলের তোড়া দিচ্ছেন ভারতের আজমীর শরিফের খাদেম হাজী সরদার এস এম জুনায়েদ মিয়া চিশতীকে; এসময় পাশে দাঁড়ানো আছেন মাস্তান মামা। রেজাউল মাসুদের শেয়ার করা আরেকটি ছবিতে দেখা যায়, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. ইকবাল বাহারের পাশে সোফায় বসে মোনাজাত ধরেছেন মাস্তান মামা।

শুধু এই অনুষ্ঠানই নয়, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ ও জেলা পুলিশের ছোট-বড় প্রায় সব অনুষ্ঠানেই মাস্তান মামাকে দেখা যায়। গত ৩০ নভেম্বর নগরীর কাজির দেউড়ি ও আগ্রাবাদ কদমতলী মোড়ে ট্রাফিক পুলিশবক্স উদ্বোধন করেন পুলিশ কমিশনার মো. ইকবাল বাহার; এ সময় পুলিশের অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মাস্তান মামাকেও উপস্থিত থাকতে দেখা যায়।

মাস্তান মামা প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি শুনেছি, পুলিশের দায়িত্বের আওতায় পড়ে এমন বিষয়ে তদবির করেন তিনি। অনেকটা বাধ্য হয়ে ওনার তদবির রক্ষার চেষ্টা করেন সবাই। উনার বাসা কোথায়, বৈধ কোনো পেশা আছে কিনা তা জানি না।’

মাস্তান মামার বিষয়ে জানতে গত ১২ জানুয়ারি সরাসরি তার বাসায় যান এই প্রতিবেদক। ওই বাসায় গেস্ট রুমের দেয়ালে বেশকিছু ছবি দেখা যায়; মূলত চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে তোলা মাস্তান মামার ছবিই সেখানে শোভা পাচ্ছিল। ওই বাসায় একটা ক্রেস্টও দেখা যায়, যেখানে মাস্তান মামাকে দাতা উল্লেখ করা হয়; আর ক্রেস্টটি দেন পুলিশ প্রধান ও মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা একেএম শহীদুল হক।

পুলিশের কাছ থেকে দূরে থাকার প্রবণতা এখনো দেখা যায় সাধারণ মানুষের মধ্যে। এ অবস্থায় পুলিশের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলা নিয়ে মাস্তান মামা বললেন, ‘পুলিশের সাথে পরিচয় দীর্ঘদিনের। আমি কোনো কাজে নেই। পুলিশের সবাই আমাকে মতব্বত করে। আর কোনো কাজ নেই। আমি হলাম খাজা দরবারের মানুষ। আমি কোনো রাজনীতিক না। আমি হলাম আধ্যত্মিক মানুষ। আজমীরে যাওয়া দুই-চারশ বার হয়ে গেছে।’
পুলিশ প্রধানের দেয়া ক্রেস্ট দেখিয়ে মাস্তান মামা বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ পুলিশ পরিবারের একজন সদস্য। আজকে ৩৮ বছর ধরে পুলিশে যাওয়া-আসা আছে। অনেক কিছুই জানা আছে, আইডিয়া আছে। আইজিপি শহীদুল হক তখন এএসপি ছিলেন, যখন প্রথম পরিচয় হয়। এটাতো আজকের পরিচয় নয়।’

পুলিশে আলোচনা আছে, ‘ভালো জায়গায়’ বদলি-পদায়ন করে দিতে পারেন মাস্তান মামা; এজন্য ভালো জায়গায় যেতে অনেকে মামার সঙ্গে টাকা লেনদেন করেন এমন অভিযোগ আছে। তবে মাস্তান মামা সরাসরি টাকা নিয়েছেন এমন কোনো তথ্য সঠিকভাবে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে মাস্তান মামা বলেন, ‘কেউ আমার বিরুদ্ধে বললে বলুক, বলে শান্তি পাক। আমি তো কোন কাজে নেই। যে বলতেছে, সে তার শান্তির জন্য বলতেছে। ‘প্রুপ’ তো তেমন কিছু নেই। বিরুদ্ধে কয়দিন বলবে? আমার সমালোচনা নিয়ে তার বক্তব্য পেপারে দিন। আমি আরও ‘গ্রেট’ হবো।’

মামার বাসায় যেদিন বসে এই প্রতিবেদকের কথা হয়, এর কয়েকদিন আগে ৯ জানুয়ারি বিয়ে হয় মাস্তান মামার এক মেয়ের। নগরের গোল্ডেন টাচ কমিউনিটি সেন্টারে রাতে আয়োজন করা ওই অনুষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায়, সাধারণ অতিথিদের চেয়ে পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিই বেশি। অভিযোগ আছে, ওই বিয়ের খরচ মেটাতে অনেক পুলিশ কর্মকর্তার কাছ থেকে বড় অংকের টাকা পেয়েছিলেন মাস্তান মামা।

ওই অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে মাস্তান মামা বলেন, ‘সেদিন পিএইচপির সুফি মিজান সাহেব এসেছিলেন। ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার, অতিরিক্ত ডিআইজি সাখাওয়াত, কুসুম দেওয়ান, সব ডিসি, ফকির সাহাবউদ্দিন এসেছিলেন। সামাজিকতা রক্ষার জন্য তারা বিয়েতে এসেছিল। এটা নিয়ে একটা সামাজিক নিউজ হওয়া উচিত ছিল। আমার মাথায় ছিল না তখন, নয়তো সাংবাদিক ডেকে এনে নিউজ করাতাম।’

‘শুধু এরা না, সারা দেশের পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে আমার সুসম্পর্ক আছে। তাদেরকে বিক্রি করে তো আমি আয় করিনি।’

‘আমার মূল্যায়ন নেই। চট্টগ্রামের মানুষ আমাকে চেনে না। কিন্তু আমার কাজ বড়। দুই নেত্রীর ঘরে কিন্তু প্রসিদ্ধ আমার নাম।’ -যোগ করেন মাস্তান মামা।

এরপর চেয়ার ছেড়ে উঠে দরজার দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন মাস্তান মামা। বুঝতে বাকি রইল না তিনি এবার বিদায় দিতে চাচ্ছেন। চলে আসার মুহুর্তে মাস্তান মামার প্রতি শেষ প্রশ্ন ছিল, আপনার আয়ের উৎস কী?

‘বয়স তো পড়ে গেছে। কিছু করি না। ছেলে আয় করে। গ্রাম থেকে ধান-চাউল আসে। এখন তো দুই বস্তা চাউল হলে ছয় মাস চলে যায়। খানা কোথায়? ডায়বেটিস। বুঝিত পারির ত, পেপারত এবার ভরি দ গই।’ -হাসিমুখে বলেন মাস্তান মামা।

সেদিনের দেখা-সাক্ষাতের পর পেরিয়ে গেছে দীর্ঘসময়। এরই মধ্যে পুলিশের নানা অনুষ্ঠানে সমানতালে দেখা মিলতো মাস্তান মামার। তাকে নিয়ে অনেকের কৌতূহল, জল্পনা-কল্পনারও হচ্ছিল না শেষ।

এদিকে মাস্তান মামার ছেলে মো. মাঈনুদ্দীন হাসান কপিলের ফেসবুক আইডিতে গিয়ে দেখা গেছে, গত ১৪ মে সাতটি ছবি শেয়ার করেছেন তিনি। সবগুলো ছবি আজমীর শরীফে তোলা। সেসব ছবিতে চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার মো. ইকবাল বাহার ও মাস্তান মামাকে দেখা যায়।

একটি পোস্টারের ছবি তুলে গত ১ সেপ্টেম্বর ‘ডু সামথিং একসেপশনাল (ডিএসই)’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে শেয়ার করেন মো. সায়েম চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি।

চিশতীয়া পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি পরিচয়ে মাস্তান মামার ছবি সম্বলিত ওই পোস্টারে লেখা ছিল, ‘খানকা শরীফ কাদেরীয়া চিশতীয়া শাহ মোহছেন আউলিয়া নূরীয়া। খাজানগর খানকা শরীফে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আপনারা সকলেই আমন্ত্রিত।’ এ ছাড়া নির্মাণাধীন খানকা শরীফের নকশার ছবি দিয়ে এতে ঠিকানা দেওয়া হয়, খাজানগর, বরুমছড়া, আনোয়ারা, চট্টগ্রাম।

পোস্টারটি শেয়ার করার সময় সায়েম চৌধুরী ফেসবুকে লিখে দিয়েছেন, ‘ইন্ডিয়া দেখতে হবে না, আমাদের দেশেও ‘রকস্টার বাবার’ কমতি নাই! মাস্তান মামা। এদের বিরুদ্ধে সঠিক পদক্ষেপ না নিলে এরা আগামী দিনে ‘বাবা রাম রহিমের’ মত বড় ধরনের ধাপ্পাবাজি গড়ে তুলবে!’

এদিকে গত ১ ডিসেম্বর বেলা ১২টার দিকে বরুমছড়া ইউনিয়নের খাজানগর এলাকায় ওই ‘খানকা শরীফ’ দেখতে যান এই প্রতিবেদক। ওই এলাকায় পৌঁছাতে বরুমছড়া রাস্তার মাথা থেকে ৮০ টাকা ভাড়ায় একটি রিকশা নেওয়া হয়। নানা কথার এক পর্যায়ে মাস্তান মামার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন এ প্রতিবেদক; তখন ওই রিকশা চালক প্রকাশ করেন চাঞ্চল্যকর তথ্য!

পঞ্চাশোর্ধ ওই রিকশাচালক বলেন, ‘আট বছর বয়সে ঘর-এলাকা ছাড়েন মাস্তান মামা। কোথায় চলে গেছে, কেউ জানতোও না। পরে শুনি, তিনি কেমনে কেমনে আজমীর শরীফ গিয়েছিলেন। সেখানে অনেক বছর ছিলেন, খেদমত করেন। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে খালেদা জিয়া একবার আজমীর গিয়েছিল। সেখানে খালেদা জিয়াকে যথেষ্ট আপ্যায়ন, সেবা করেছেন মাস্তান মামা। খালেদা জিয়া খুশি হয়। পরে সৌদি আরবে যাওয়ার সময় মামাকে নিয়ে যায় খালেদা জিয়া, আবার নিয়ে আসে। খালেদা জিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে প্রত্যেকটা বাহিনীর বড় কর্মকর্তাদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। বাংলাদেশে যত বাহিনী আছে, সবার সঙ্গে রিলেশন আছে। ওনার যে ভিজিটিং কার্ড আছে, সেই কার্ড নিয়ে গ্রামের কোনো গাড়ি শহরে গেলেও সমস্যা নেই। ওনার কার্ডটা দেখালে হবে। কোন বাহিনী ধরবে না।’

এলাকায় মাস্তান মামার সহায়-সম্পদ নিয়ে বরুমছড়ার এই বাসিন্দা বলেন, ‘কিছু জমি আছে। আরও কিছু আস্তে আস্তে পরিপূর্ণ হবে আর কি। তার আয় কী তা কেউ জানে না। ব্যবসা-বাণিজ্য কিছুই নেই। শুধু… ও খাজা আজমীরের খাদেম।’

‘ডাকাত-চোরের ছেলে-মেয়ে পরহেজগার বেশী হয়। ওর বাবা ছিল, ‘আন্তর্জাতিক’ ডাকাত। বৈদ্য চোরা ডাকাইত বলতো। মামলা বহু ছিল। পুলিশে কতবার যে ধরেছে। বাড়ি-ঘরে ডাকাতি করতো। এখন দুনিয়া থেকে চলে গেছে। ছেলে বড় কিছু হলে মা-বাবার এসব ভুলে যায়। এখন ছেলে ক্ষমতাধর। লাইনে আছে। মানুষকে সেবা দিলে সব ভুলে যাবে।’ যোগ করেন ওই রিকশাচালক।

তিনি আরও বলেন, ‘মাস্তান মামার ভাই-বোন কেউ নেই। মেয়ে বিয়ে দিয়েছে, ছেলের জন্য বউ এনেছে। ওর থেকে লেখাপড়া বিদ্যা না থাকলে কী হবে, ছেলে-মেয়েদের মানুষ করে ফেলেছে।’

বরুমছড়া রাস্তার মাথা থেকে প্রায় ২০ মিনিট রিকশায় চড়তে হয় খাজানগর খানকা শরীফ যেতে। এই পথের শেষটুকু এতোদিন কাঁচা সড়ক ছিল। প্রায় দুই কিলোমিটার ওই কাঁচা সড়ক এখন তৈরি করা হচ্ছে ইট-পাথর ও বালুতে। সড়কের কাজ দ্রুতগতিতে চলতে দেখা যায় গত ১ ডিসেম্বর পরিদর্শনকালে।
আগামী ৮ ডিসেম্বর জুমার নামাজের পর যে খানকা শরীফ উদ্বোধনের কথা রয়েছে, সেটির নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ। তিনতলা ভবনটি নীল রঙে রাঙানো হয়েছে। খানকা শরীফের প্রবেশমুখে অন্তত তিনটি বড় ব্যানার টাঙানো হয়েছে; যেখানে খানকা শরীফের উদ্বোধনের তারিখ ও এতে জাতি ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, খানকা শরীফ উদ্বোধনের দিন উপস্থিত থাকতে চট্টগ্রামের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন মাস্তান মামা। ইতিমধ্যে অনেকেই আমন্ত্রণ পেয়েছেন। আমন্ত্রণের চিঠির একটি কপি এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

এতে উল্লেখ করা হয়, সুলতানুল হিন্দ খাজা গরীবে নেওয়াজ চিশতী সানজারী চুম্মা আজমিরী (রা.) ‘মর্জিক্রমে’ তারই নাম অনুসারে বরুমছড়া খাজানগর খানকায়ে কাদেরীয়া চিশতীয়া শাহ মোহছেন আউলিয়া নূরিয়া খানকাহ শরীফের শুভ উদ্বোধন ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

(গরীবে নেওয়াজ নামেও পরিচিত খাজা মঈনুদ্দীন চিশতী ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলাম প্রচারে কিংবদন্তিতুল্য একজন ঐতিহাসিক সুফি ব্যক্তিত্ব। তিনি ১১৪১ সালে জন্মগ্রহণ করেন ও ১২৩৬ সালে মৃত্যুবরণ করেন।)

খানকাহ শরীফের উদ্বোধনের আমন্ত্রণ জানানোর ওই চিঠিতে উল্লেখ আছে, ভারতের আজমীর শরীফের খাস খাদেম হাজী সর্দার সৈয়দ এস.এম জুনায়েদ মিয়া চিশতী ও পিএইচপি ফ্যামেলির চেয়ারম্যান সুফি মো. মিজানুর রহমান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। এতে সভাপতিত্ব করবেন আনোয়ারা উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী। চিঠির শেষে মাস্তান মামার পরিচয় উল্লেখ করা হয়েছে; তিনি খানকাহ-এ-কাদেরীয়া, চিশতীয়া শাহ মোহছেন আউলিয়া, নূরিয়া এর প্রতিষ্ঠাতা।

মাস্তান মামার বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. ইকবাল বাহারের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।