চট্টগ্রাম : কোতোয়ালী থানার আলোচিত অপহরণ মামলায় এনায়েত বাজার মহিলা কলেজের সম্মান প্রথম বছরের ছাত্রী সাদিয়া হোসাইন আনিকাকে (২০) নিজ জিম্মায় যাওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় শুনানী শেষে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-৬ মেহনাজ রহমানের আদালত এ আদেশ দেন।
এর আগে একই আদালতে ভিকটিম সাদিয়া হোসাইন আনিকাকে হাজির করা হয়। শুনানির সময় আদালতে আনিকার বাবা হোসাইন আহমেদ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বক্তব্য দেন।
ভিকটিমের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন চট্টগ্রাম ফাইট ফর উইমেন রাইটস-এর প্রেসিডেন্ট এডভোকেট রেহানা বেগম রানু। তাকে সহায়তা করেন সিনিয়র আইনজীবী নিতাই দে, মুজিবুর রহমান ফারুক, নাছির উদ্দিন প্রমুখ।
দুপুর ২টায় এই মামলায় নুরুল আমিনসহ গ্রেফতার ২ জনের জামিন আবেদনের শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করেন।
প্রসংগত, রাউজান উপজেলার কচুখাইন গ্রামের হোসাইন আহমেদের কন্যা এবং আনোয়ারা তালসরা দরবার শরীফের পীর আহমদ ছফার নাতনি আনিকা গত ১২ নভেম্বর ভালোবেসে বিয়ে করেন কাতারের ইন্টারনেট সফটওয়্যার কোম্পানিতে কমরত তারেকুল ইসলামকে (২৮)। তারেক বোয়ালখালী উপজেলার পশ্চিম কধুরখীল গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে।
এদিকে আনিকাকে অপহরণ করা হয়েছে দাবি করে তার বাবা হোসাইন আহমেদের এক অভিযোগের পেক্ষিতে কোতোয়ালী থানা পুলিশ তারেকুল ইসলামের বড়ভাই নুরুল আমিন ও এক বন্ধুকে সোমবার দুপুরে পশ্চিম কধুরখীল এলাকা থেকে তুলে নিয়ে আসে। মংগলবার সন্ধ্যা ৭ টার দিকে কোতোয়ালী থানায় এই সংক্রান্ত একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে বুধবার বিকেলে তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়। মামলায় তারেককেও আসামী করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, পুলিশ বাদী পক্ষে প্রভাবিত হয়ে নুরুল আমিনকে থানা হাজতে শারীরিক নিযাতন চালায় এবং সেই নিযাতন ও কান্নার শব্দ শুনিয়ে আমিনের পরিবারের সদস্যদের মাঝে চরম ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে।
শুধু তাই নয়, যাতে জামিনের শুনানির সময় পেরিয়ে যায় সেজন্য পুলিশ ইচ্ছে করে বিকাল ৪টার পর গ্রেফতারকৃতদের আদালতে হাজির করে বলে আমিনের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়।
অন্যদিকে, তারেকের বড়ভাইকে আদালতে হাজির করার খবর পেয়ে বুধবার সকাল থেকে আদালত এলাকায় অবস্থান নেয় ভিকটিম সাদিয়া হোসাইন আনিকা। আসামীদের আদালতে পাঠাতে বিলম্ব হওয়ায় তিনি আর জবানবন্দি দিতে পারেননি।
সেদিন সাড়ে ৫টার দিকে গন্তব্য ফিরতে আনিকা আইনজীবী ভবন এনেক্স ২ থেকে নেমে অপেক্ষমান গাড়িতে উঠতে চাইলে তার বাবা হোসাইন আহমদ, চাচা মান্নানের নেতৃত্বে একদল যুবক হামলা চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালায়।
এসময় আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট রতন কুমার রায় ও ফাইট ফর উইমেন রাইটস-এর প্রেসিডেন্ট এডভোকেট রেহানা বেগম রানু হস্তক্ষেপ করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। পরে উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃব্দ আদালতে হাজির করার শতে এডভোকেট রেহানা বেগম রানুর জিম্মায় দেন আনিকাকে।
সেই অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকালে মেয়েটিকে আদালতে হাজির করেন এডভোকেট রানু।