প্রতিবাদের মুখেও এম এ আজিজ স্টেডিয়াম পরিদর্শন করলেন বাফুফে কর্মকর্তারা


সংগঠক ও ক্রীড়াবিদদের তীব্র আপত্তির মুখেও চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) দুই কর্মকর্তা। মঙ্গলবার বিকেলে তারা স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেন।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ১২টি শর্তে স্টেডিয়ামটি বাফুফেকে দীর্ঘমেয়াদী লিজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকেই চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। স্টেডিয়ামটি বাফুফেকে বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে মঙ্গলবারও স্টেডিয়াম এলাকায় মানববন্ধন করেছেন বিভিন্ন ইভেন্টের সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড়, সংগঠক, ক্রীড়ানুরাগী ও রাজনীতিকরা।

যদিও পূর্ব নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী মঙ্গলবার দুপুরে বাফুফে প্রতিনিধিদের স্টেডিয়াম পরিদর্শনের কথা ছিল, কিন্তু তারা নির্ধারিত সময়ে না এসে বিকেলে পরিদর্শন করেন।

বাফুফে’র ম্যানেজার (কম্পিটিশন) জাবেদ বিন তাহের আনসারী ও সহকারী ম্যানেজার (প্রজেক্ট) তানভীর আহম্মেদ সিদ্দিকী স্টেডিয়াম পরিদর্শন করলেও এ বিষয়ে গণমাধ্যমের সাথে কথা বলতে রাজি হননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, “আমরা স্টেডিয়ামে গিয়ে বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করে কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি। বিস্তারিত কিছু বলতে পারব না।”

চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার বিলুপ্ত কমিটির সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান জানান, “বাফুফের দুই প্রতিনিধি দুপুরে আসার কথা থাকলেও তারা আসেননি। শুনেছি বিকেলে তারা স্টেডিয়ামে এসে আমাদের অফিস কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে চলে গেছেন।”

এদিকে, সকালে স্টেডিয়াম চত্বরে ‘স্টেডিয়াম রক্ষা কমিটি’র ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “চট্টগ্রামের ক্রীড়া সংগঠকদের সাথে আলোচনা না করে ঐতিহ্যবাহী এই স্টেডিয়ামকে বরাদ্দ দেওয়া চট্টগ্রামবাসী কোনোদিন মেনে নেবে না। অবিলম্বে এই চুক্তি বাতিল করতে হবে। অন্যথায় চট্টগ্রামবাসীকে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”

মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিয়াজ মো. খান, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সহ সভাপতি শাহীন আফতাবুর রেজা চৌধুরী, হাফিজুর রহমান, সৈয়দ আবুল বশর, চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজ উদ্দিন মো. আলমগীর, বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম, ক্রীড়া সংগঠক মশিউল আলম স্বপনসহ ক্রীড়া সংঠকরা।

উল্লেখ্য, গত ২ জানুয়ারি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এম এ আজিজ স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক ফুটবল স্টেডিয়াম হিসেবে তৈরির জন্য ১২টি শর্তে বাফুফের কাছে দীর্ঘমেয়াদী লিজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এই সিদ্ধান্তের পর থেকেই চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। গত ৩০ জানুয়ারি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে বাফুফের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে স্থানীয় জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থাগুলোকে খেলাধুলা আয়োজনের অনুমোদন দেওয়া যেতে পারে বলে জানায়। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের এই নতুন সিদ্ধান্তটিও মানতে নারাজ ক্রীড়া সংগঠকরা।