সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১ মাঘ ১৪৩১

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি: নবগঠিত কমিটিতে অসন্তোষ, লেয়াকতের পদত্যাগ?

মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন | প্রকাশিতঃ ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | ৬:৩৬ অপরাহ্ন


চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণার পরপরই হতাশা দেখা দিয়েছে লেয়াকত আলী সমর্থকদের মাঝে। রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) ঘোষিত কমিটিতে যুগ্ম আহবায়ক পদ পেয়েও ক্ষুব্ধ লেয়াকত আলী নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ইদ্রীস মিয়াকে আহ্বায়ক, আলী আব্বাসকে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক, লেয়াকত আলী ও মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পাকে যুগ্ম আহ্বায়ক এবং লায়ন হেলাল উদ্দিনকে সদস্য সচিব করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটি ঘোষণা করা হয়।

কমিটি ঘোষণার পর পরই লেয়াকত আলী এই কমিটি প্রত্যাখ্যান করে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে পোস্টে লেখেন, “দল আমাকে যথেষ্ট মূল্যায়ন করার চেষ্টা করছে। আমাকে দেয়া যাকাতি পদটি অন্য কাউকে দিয়ে খুশি করুন। আমি পদত্যাগ করলাম।” তবে এই স্ট্যাটাস দেওয়ার কিছুক্ষণ পর তিনি নিজের টাইমলাইন থেকে তা ডিলেট করে দেন।

উল্লেখ্য, ঘোষিত কমিটিতে লেয়াকত আলীর নাম ভুলবশত ‘লেয়াকত হোসেন’ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এই পোস্টের কয়েক মিনিটের মাথায় আরেক পোস্টে তিনি লেখেন, “দক্ষিণ জেলা কমিটিতে যে লেয়াকত দেখা যাচ্ছে সেটি আমি নই।”

কিছুক্ষণ পর অপর পোস্টে তিনি লেখেন, “মজলুম হয়ে যারা জম্মে তারা সব দিক থেকে মজলুম থাকে। আলহামদুলিল্লাহ।”

রবিবার সন্ধায় লেয়াকত আলী আরেক পোস্টে লেখেন, “যারা আমার কথায় ঝুঁকি নিয়ে মিছিল করেছেন, জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন। আপনাদের জীবন ধ্বংসের জন্য আমি দায়ী।”

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণার পর দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর কনিষ্ঠ পুত্র মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরীর সমর্থকদের মাঝে উল্লাস দেখা গেলেও লেয়াকত গ্রুপের সমর্থকরা এই কমিটি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। অনেককে এনিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়া জানাতেও দেখা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও গণ্ডামারা ইউপি চেয়ারম্যান লেয়াকত আলীকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

তবে লেয়াকত আলীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী গণ্ডামারার আলী নবী মেম্বার বলেন, “যেখানে অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন, শেখ মহিউদ্দিন, এনাম ভাই, সুফিয়ান ভাই, আবছার ভাই, মহসিন ভাই সহ বড় বড় নেতাদের নাম আসেনি, সেখানে লেয়াকত ভাইয়ের নাম এসেছে। এতো ঠেলাঠেলির মধ্যেও লেয়াকত আলীর পক্ষে তো কেউ ছিল না। সেখানেও ৫ জনের মধ্যে লেয়াকত ভাইয়ের নাম এসেছে। সেটার জন্য লাখো কোটি শোকরিয়া। কিন্তু সেটা তো লেয়াকত ভাই কে বুঝাতে পারছি না। তিনি আমাদের কল রিসিভ করছেন না কমিটি ঘোষণার পর। কাংখিত পদ না পেয়ে মনের দুঃখ থেকে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন।”

তিনি আরও বলেন, “তিনি যতটুকু রাজনীতি করেছেন, ততটুকু রাজনীতি কেউ করেননি। জেল-জুলুম, মামলা থেকে শুরু করে কম নির্যাতন সহ্য করেননি। আজকে এতো জেল-জুলুম সহ্য করার পরও দলীয় কমান্ড বিষয়টি বিবেচনা করেননি। একটু হাই র‍্যাংকে লেয়াকত ভাইয়ের নামটি স্থান পায়নি। এরপরও মনের দুঃখ মনকে বুঝাচ্ছি আর কি। বিএনপি ছেড়ে যাবো কোথায়? পদত্যাগ করার প্রশ্নই আসে না। পিতার সাথে যেমন ছেলে রাগ করে, সেভাবে দলের প্রতি একটু অভিমান করেছে আর কি। এটা পরে ঠিক হয়ে যাবে।”