মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ৮ মাঘ ১৪৩১

পাওনা পরিশোধে হিমশিম, বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে অশনি সংকেত

একুশে প্রতিবেদক | প্রকাশিতঃ ২০ জানুয়ারী ২০২৫ | ৯:২০ অপরাহ্ন


বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বকেয়া পরিশোধে সরকারের ওপর দেশি-বিদেশি কোম্পানিগুলোর চাপ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। দ্রুত পাওনা পরিশোধের জন্য দফায় দফায় চিঠি দেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ, গতকাল (রবিবার) আদানি পাওয়ারের পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ বিভাগকে চিঠি দিয়ে পাওনা ৮৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অতিরিক্ত অর্থ চলতি বছরের জুনের মধ্যে পরিশোধের জন্য বলা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে পেমেন্ট দিলে সারচার্জ দিতে হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে। আদানি ঝাড়খন্ডে তাদের ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট বন্ধ রেখেছে বকেয়া জটিলতায়।

এদিকে, পেট্রোবাংলার কাছে গ্যাস বিক্রি বাবদ বহুজাতিক মার্কিন কোম্পানি শেভরনের পাওনা ২২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। শেভরন গত বৃহস্পতিবার জ্বালানি বিভাগে চিঠি দিয়ে দ্রুত ৭৫ মিলিয়ন ডলার পরিশোধের অনুরোধ জানিয়েছে।

একই দিন কাতারের রাস লাফফান লিকুইফায়েড ন্যাচরাল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (কাতার গ্যাস) ১৫০ মিলিয়ন ডলার পাওনা চেয়ে চিঠি দিয়েছে জ্বালানি বিভাগকে।

মোট ৩৭০ মিলিয়ন ডলার পাওনা পরিশোধের চিঠি দুটির অনুলিপি পেট্রোবাংলার কাছেও পাঠানো হয়েছে।

শেভরনের প্রেসিডেন্ট ও এমডি এরিক এম ওয়াকার স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, গ্যাস বিক্রি বাবদ পেট্রোবাংলার কাছে শেভরনের মোট পাওনা ২২০ মিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে বিক্রীত গ্যাসের মূল্য ১৭৫ মিলিয়ন ডলার এবং বাকি ৪৫ মিলিয়ন ডলার ভ্যাট ও সুদ।

জিটুজি ভিত্তিতে কাতারের কাছ থেকে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় এলএনজি আমদানি করছে পেট্রোবাংলা। কাতার গ্যাসের বকেয়া পরিশোধেই এখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ে বকেয়া পরিশোধে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ পেট্রোবাংলা। সেটি করা না হলে সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় বড় ঝুঁকি তৈরি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। শেভরনের জরুরি ভিত্তিতে চাওয়া ৭৫ মিলিয়ন ডলারও দ্রুততম সময়ের মধ্যে পরিশোধ করে দিতে চায় জ্বালানি বিভাগ।

দেশে জাতীয় গ্রিডে দৈনিক গ্যাস সরবরাহের ৬০ শতাংশের জোগান দিচ্ছে শেভরন।

বিপিসি সূত্রে জানা যায়, তারা বকেয়া তেলের বিল পরিশোধে আগের চেয়ে ভালো অবস্থানে ফিরেছে। তবে এখনও তাদের বকেয়া প্রায় ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ডলার সংকটে সংস্থাটিকে প্রায়ই সংকটে পড়তে হচ্ছে।

শুধু বিদেশি কোম্পানি নয়, দেশীয় বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোরও অনেক বকেয়া জমেছে। বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর সমন্বিত পাওনা প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। অনেক কোম্পানিকে বন্ড ইস্যু করা হয়েছে। তাদের পাওনা পরিশোধেও সরকারের ওপর চাপ রয়েছে।

আদানির বকেয়া পাওনা পরিশোধে বিদ্যুৎ বিভাগ ও অর্থ বিভাগের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন পিডিবির চেয়ারম্যান রেজাউল করিম।