ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) : চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার লেলাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. সরোয়ার উদ্দিন চৌধুরী শাহীনকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে লেলাং।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, চেয়ারম্যান শাহীনকে ফাঁসানোর জন্য এই মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গত ৮ জানুয়ারি হাটহাজারী থানায় হেফাজত অধ্যুষিত মাদ্রাসার ছাত্র হত্যা মামলায় শাহীনকে চট্টগ্রাম নগরী থেকে ডিবি পুলিশ গ্রেফতার করে।
এরপর থেকে বিক্ষিপ্তভাবে তার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন, বিক্ষোভ-সংগ্রাম ও মানববন্ধন অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, মামলার বাদি হেফাজতকর্মী মো. কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন অভিযুক্ত চেয়ারম্যান শাহীনের নাম বাদ দিতে আদালতে আপোষ দিয়েছেন।
হেফাজতের আমীর শাহ মহিবুল্লাহ বাবুনগরী বিষয়টিকে ইতিবাচক বলছেন। তিনি বলেন, “চেয়ারম্যান একজন ভালো মানুষ। দীর্ঘকাল থেকে তিনি সংগঠন ও বিভিন্ন দ্বীনি প্রতিষ্ঠানে অকাতরে দান করেন। হেফাজতের বিভিন্ন প্রয়োজনেও হাত বাড়িয়েছেন। বাদি আপোষ দেওয়ার মাধ্যমে তার ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”
মো. সরোয়ার উদ্দিন চৌধুরী শাহীনের আইনজীবী এ কে করিম বলেন, “গত ৯ জানুয়ারি আদালতে হাজির হয়ে চেয়ারম্যানের জামিন আবেদন করলে অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম সরওয়ার জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান। ফলে পরবর্তী ধার্য ২২ জানুয়ারি আবার তার জামিনের আবেদন করা হবে। সেদিনও জামিন না হলে আমরা উচ্চ আদালতে যাব।”
ইউনিয়নের বাসিন্দারা জানান, একটি সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় এলাকার জনদরদী শাহীন চেয়ারম্যানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এটি একটি বড় চক্রান্ত। তাকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত এলাকায় আন্দোলন চলবে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. জুনায়েত হোসেন শামীম বলেন, “শাহীন একজন মানবিক জনপ্রতিনিধি। তিনি দলমতের উর্ধ্বে উঠে সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। যে কোনো দুর্যোগ ও মানুষের সুখ-দুঃখে পাশে ছুটে গেছেন এবং অসহায়দের অকাতরে দান করেছেন। তার এই গ্রেফতার আমাদের ব্যথিত করেছে।”
ইসলামিয়া বাজারের ব্যবসায়ী মো. মুনসুর বলেন, “চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে শাহীন এলাকায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন। যা অতীত ইতিহাসে হয়নি। তিনি কোনো হামলায় জড়িত নন। একটি মহল ষড়যন্ত্র করে তাকে গ্রেফতার করিয়েছেন। অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিতে হবে, নইলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।”
এলাকার সংবাদকর্মী মোস্তফা কামরুল বলেন, “পুরো ইউনিয়নকে তিনি মেধা, মনন ও প্রজ্ঞার মাধ্যমে গড়েছেন এক উজ্জ্বল অধ্যায়ে। গরীব মানুষের পাশে থেকে তিনি সব সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন। রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, শিক্ষা-স্বাস্থ্য সেবায় বিশেষ অবদান, সামাজিক উন্নয়নসহ বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়নে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।”
হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু কাওসার মোহাম্মদ হোসেন বলেন, “মামলায় এজাহারভুক্ত বলে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কে অপরাধী আর কে নিরপরাধ সেটি দেখার এখতিয়ার আদালতের।”