বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১

তাকওয়া মডেল মাদ্রাসায় ১১৫ জন শিক্ষার্থীকে পাগড়ি ও অ্যাওয়ার্ড প্রদান

প্রকাশিতঃ ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৫:৫৬ অপরাহ্ন


একুশে ডেস্ক : চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাকওয়া মডেল মাদ্রাসার সকল শাখার হিফজ সম্পন্নকারী শিক্ষার্থীদের সম্মানে পাগড়ি ও অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। এতে ১১৫ জন শিক্ষার্থীকে পাগড়ি প্রদান করা হয়।

বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে নগরীর চকবাজারস্থ কিশলয় কনভেনশন হলে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।

তাকওয়া এসোসিয়েটসের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. শাফী উদ্দিন মাদানীর সভাপতিত্বে হাফেজ আব্দুল আজিজ শোয়াইব ও গোলাম মোস্তাফার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শামছুল আলম। প্রধান আলোচকের বক্তব্য রাখেন প্রবীণ মুহাদ্দিস ও ইসলামী স্কলার মুফতী কাজী ইবরাহীম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের অধ্যাপক ড. আ ক ম আব্দুল কাদের।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম জর্জ কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট মাজহারুল ইসলাম ও আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান।

অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন তাকওয়া মডেল মাদ্রাসার মাশক বিভাগের শিক্ষক ক্বারী সাদ মাশরুফ। উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন তাকওয়া এসোসিয়েটসের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. শাফী উদ্দীন মাদানী। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন তাকওয়া এসোসিয়েটসের সেক্রেটারি মো. মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. শামছুল আলম বলেন, “বাংলাদেশের মধ্যে যদি কোন ইসলামিক পরিবর্তন আসে সেটা আসবে চট্টগ্রাম থেকে। ছাত্রদেরকে শুধু কুরআনের হাফেজ বানিয়ে ছেড়ে দিলে হবে না, তাদেরকে কুরআনের আলেম বানানোর দায়িত্ব নিতে হবে তাকওয়া মাদ্রাসাকে। দেশকে সমৃদ্ধ করতে হলে, দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হলে মাদ্রাসা শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের ব্যক্তি জীবন, সমাজ জীবন ও রাষ্ট্র জীবনকে কোরআনের আলোকে সাজাতে হবে।”

তিনি সকলকে নিজেদের জীবনকে কুরআনময় করার আহবান জানান এবং তাকওয়া মাদ্রাসার উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করেন।

প্রধান আলোচকের বক্তব্যে মুফতী কাজী ইবরাহীম বলেন, “আমি তাকওয়া মাদ্রাসার ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের কোয়ালিটি ও কোয়ান্টিটি থেকে আবেগে আপ্লুত হলাম। বাংলাদেশের মধ্যে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম ভৌগোলিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই চট্টগ্রামকে হিংস্র হায়েনার হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। আর এই রক্ষা করার দায়িত্ব হচ্ছে কোরআন প্রেমি শিশু কিশোর ও যুবকদের।”

তিনি বলেন, “কোরআন হার্ড কপি নাযিল হয়নি কিন্তু তাওরাত, যাবুর হার্ড কপি নাযিল হয়েছে। আমরা মলাটবদ্ধ যে কুরআন দেখছি সেটা আসল কুরআন নয়, আসল কুরআন হল রাসূলুল্লাহ (সঃ) এবং কুরআনের হাফেজরা। চট্টগ্রামকে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ইহুদিরা ইসরাইলকে রাষ্ট্র বানিয়েছে কোরআনের মডেলকে নকল করে। চট্টগ্রামকে ইসলামের ধারক বাহক হিসেবে জানে পুরা বিশ্ব। যাদের হাতে কুরআন এবং লোহা থাকবে অর্থাৎ সম্মুখ যুদ্ধের তরবারি থাকবে তারাই পুরা বিশ্ব এবং দেশকে শাসন করবে।”

নারী শিক্ষার গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, “ইসলামে নারীরাই হলো রাষ্ট্র, মায়েরাই রাষ্ট্র। প্রতিটা পরিবারকে স্কুল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে মায়েরাই। কোরআনের অধিক সুরার মধ্যে নারীদের কথা লেখা আছে। নারীদেরকে নিরাপদ রাখতে পারলে পুরা দেশ এবং রাষ্ট্র নিরাপদ থাকবে। বর্তমান বাংলাদেশের বয়ফ্রেন্ড গার্লফ্রেন্ডের নামে অবাধে যৌনাচার রাষ্ট্রকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র বানানোর চক্রান্ত চলছে।”

উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের তাকওয়া মডেল মাদ্রাসার তিনটি শাখা রয়েছে, চকবাজার, মেহেদী বাগ ও চন্দনপুরা। এ তিনটি শাখায় মোট ১৪০০ শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। হিফজ এবং জেনারেল মিলে এতে মোট ৮২ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা পাঠদান করান।