বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১

উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হচ্ছে বড়দিন

প্রকাশিতঃ ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৮:৪২ পূর্বাহ্ন


ঢাকা : বিশ্বের নানা প্রান্তে যুদ্ধ-বিগ্রহ ও অশান্তির মধ্যে এবং বাংলাদেশ একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি পার করার পর, আজ খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীরা তাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বড়দিন পালন করছে। খ্রিষ্টধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিষ্টের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এই উৎসব পালিত হয়। খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, মানবজাতির মধ্যে শান্তি ও ন্যায়ের বার্তা পৌঁছে দিতেই যিশুর আগমন।

আজ বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও খ্রিষ্টান সম্প্রদায় ধর্মীয় আচার, প্রার্থনা ও আনন্দ-উৎসবের মাধ্যমে দিনটি উদযাপন করছে। বড়দিন উপলক্ষে দেশের গির্জাগুলো সেজেছে বর্ণিল সাজে।

রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রানীর গির্জায় গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে দেখা যায়, নানা রঙের বাতিতে সেজে উঠেছে গির্জা। সন্ধ্যা হতেই এই আলোকসজ্জা উৎসবের আমেজ আরও বাড়িয়ে দেয়। পুরো গির্জা বিভিন্ন বাইবেলের বাণী দিয়ে সাজানো হয়েছে। গির্জা প্রাঙ্গণে দুটি গোশালা তৈরি করা হয়েছে, যেখানে খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীরা প্রার্থনা করতে পারবেন। মূল প্রার্থনা ঘরের বেঞ্চগুলোতে রাখা হয়েছে খ্রিষ্টযাগের রীতির বই।

ফাদার জয়ন্ত গোমেজ জানান, বিশ্বে চলমান যুদ্ধ ও দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানুষ শান্তি ও স্থিতিশীলতা চায়, তাই এবারের প্রার্থনায় শান্তির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বড়দিনের আগের দিন সন্ধ্যায় ও রাতে এবং বড়দিনের দিন সকালে বিশেষ প্রার্থনা (খ্রিষ্টযাগ) অনুষ্ঠিত হয়। ফাদার গোমেজ আরও বলেন, খ্রিষ্টের আত্মত্যাগের প্রতীকস্বরূপ এই খ্রিষ্টযাগ পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে ক্ষমা প্রার্থনা, বাইবেল থেকে বাণী পাঠ ও ব্যাখ্যা এবং যজ্ঞ নিবেদন করা হয়। বড়দিনের অনুষ্ঠানে প্রার্থনা ছাড়াও সারা দিন মানুষ গির্জায় আসেন এবং বিকেলে সান্তা ক্লজ শিশুদের মাঝে উপহার বিতরণ করেন।

খ্রিষ্টধর্ম অনুযায়ী, যিশুখ্রিষ্ট ফিলিস্তিনের বেথলেহেম শহরের এক গোয়ালঘরে এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন। তাদের বিশ্বাস, সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচার এবং মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালনা করার জন্য যিশুর জন্ম।

কাকরাইলের সেন্ট মেরি’স ক্যাথেড্রাল চার্চেও একই উৎসবের আমেজ দেখা যায়। সিস্টাররা গোশালা সাজানো ও প্রার্থনা ঘর প্রস্তুত করার কাজে ব্যস্ত।

বড়দিন উপলক্ষে দেশজুড়ে গির্জাগুলোতে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদ করিম জানান, প্রতিটি চার্চে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সোয়াত, বোম্ব ডিসপোজাল টিম ও অন্যান্য স্পেশালাইজড ইউনিট এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরাও নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বড়দিন উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বাণীতে বলেন, বড়দিন দেশের খ্রিষ্টান ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মধ্যে বিদ্যমান সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতিকে আরও সুদৃঢ় করবে।