বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১

১২০০ কোটি টাকার টানেল সংযোগ সড়ক: কবে হবে কাজ শুরু?

প্রকাশিতঃ ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৬:২৩ অপরাহ্ন


এম. বেলাল উদ্দিন, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) : কর্ণফুলী টানেলের সাথে সংযোগকারী আনোয়ারা কালাবিবি দীঘির মোড় থেকে চকরিয়া পর্যন্ত ৫৬ কিলোমিটার সড়কটির ভবিষ্যৎ এখনও অনিশ্চিত। ১২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য এই সড়কটি, যা পিএবি টইটং সড়ক নামে পরিচিত, প্রায় এক বছর ধরে ফাইলবন্দী হয়ে আছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে টানেলের কার্যকারিতা বাড়বে এবং দক্ষিণ চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও সহায়ক হবে।

এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো টানেলে যানবাহনের চলাচল বৃদ্ধি করা, দক্ষিণ চট্টগ্রামে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারিত করা, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করা এবং কক্সবাজার পর্যন্ত একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। এই লক্ষ্যে, টানেল সড়ক থেকে কক্সবাজারের প্রধান সড়ক পর্যন্ত ৫৬ কিলোমিটার টইটং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু প্রায় এক বছর ধরে প্রকল্পটি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় আটকে আছে। এই কারণে টানেলের ব্যবহার এবং দক্ষিণ চট্টগ্রামের সড়ক ব্যবস্থার উন্নতি ব্যাহত হচ্ছে।

এই বৃহৎ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে আনোয়ারার কালা বিবির দীঘি থেকে চকরিয়া পর্যন্ত ৫৬ কিলোমিটার রাস্তা ১৮ ফুট থেকে ৩৪ ফুটে উন্নীত হবে। এর ফলে টানেল হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্ভাবনা আরও বাড়বে। এছাড়াও, এটি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের একটি বিকল্প পথ হিসেবে কাজ করবে, যা যাত্রী সুবিধা বৃদ্ধি করবে এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে আনবে।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পটিয়া-আনোয়ারা-বাঁশখালী-টইটং সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য প্রায় এক বছর আগে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৫ সালে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সরকারের পরিবর্তনের কারণে এবং পূর্বের সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর পর্যালোচনা করার জন্য প্রকল্পটি এখনও অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।

এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারা, বাঁশখালী, চকরিয়া এবং কক্সবাজারের সাথে সড়ক যোগাযোগে একটি বড় পরিবর্তন আসবে। এতে লক্ষ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবে, টানেলের ব্যবহার বাড়বে এবং টোল আদায়ের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের লোকসানও কমবে।

সড়ক বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, টানেলের সাথে সংযোগকারী সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়নের জন্য ১২০০ কোটি টাকার এই মেগা প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন ও অনুমোদনের জন্য চলতি বছরের জানুয়ারিতে সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে এটি এখনও অনুমোদন পায়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পিএবি-টইটং সড়কের আনোয়ারা কালা বিবি দীঘির মোড় থেকে বাঁশখালীর চাঁনপুর বাজার পর্যন্ত ১০০ ফুট জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু চাঁনপুর বাজার থেকে চকরিয়া পর্যন্ত সড়কটি মাত্র ১৮ ফুট প্রশস্ত, যা যান চলাচলের জন্য যথেষ্ট নয়। এর ফলে এই সড়কে প্রায়ই যানজট ও দুর্ঘটনা ঘটে।

বাঁশখালীর স্থানীয় ছাত্রনেতা নিজাম উদ্দিন বলেন, এই সড়কে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে এবং এটি একটি বিপজ্জনক সড়ক হিসেবে পরিচিত। সড়কটি প্রশস্ত করা হলে দুর্ঘটনা কমবে।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা জানান, প্রকল্পটি বর্তমানে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। এটি বাস্তবায়িত হলে সড়কের যানজট ও দুর্ঘটনা কমবে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবে। এছাড়াও, এটি কক্সবাজারের সাথে চট্টগ্রামের একটি বিকল্প সড়ক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।