একুশে ডেস্ক : বাংলাদেশ কালচারাল সোসাইটি ক্যানটাবেরির উদ্যোগে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের ফেনদেলটন কমিউনিটি সেন্টারে বিজয় দিবস ২০২৪ উদযাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং সান্ধ্য ভোজের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সঞ্চালক কনক চাঁপা কায়স্থগীর ও ক্রিষ্টফার পালমা অতিথিবর্গকে সাদর আমন্ত্রণ জানিয়ে অনুষ্ঠানটি শুরু করেন। এরপর সংগঠনের সভাপতি এম. এম. হারুন-র-রাশীদ তাঁর বক্তব্যে জাতির জীবনে ১৬ ডিসেম্বরের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। পরবর্তীতে সংগঠনের জেনারেল সেক্রেটারি এস. এম. আকরামুল কবির উপস্থিত অতিথিবর্গের জন্য স্লাইডশোয়ের মাধ্যমে সংক্ষিপ্তভাবে ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দ্বারা গণহত্যার শিকার হওয়া একটি জাতি কিভাবে নয় মাস ব্যাপী একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ-সংগ্রামের মাধ্যমে বিজয় ছিনিয়ে এনে একটি স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠা করলো সেই ইতিহাস তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত করার জন্য তিন ভাগে ভাগ করা হয়। প্রথম পর্বে কোরাস এবং একক সঙ্গীতমালা পরিবেশন করা হয়। অন্য পর্বে দেশাত্মবোধক কবিতা ও ছড়া এবং আরেকটি পর্বে একক ও দ্বৈত নৃত্য পরিবেশন করা হয়।
এ পর্যায়ে শুরুতে নয়নিকা আইচ পিয়ানোর মাধ্যমে বাংলদেশের জাতীয় সংগীতের সুর পরিবেশন করেন। উপস্থিত সবাই দাঁড়িয়ে শিল্পীর সাথে সুর মিলান। পরবর্তীতে শিশুশিল্পী নয়নিকা, রুদ্র, ফাউজান, আইয়ান, ইযহান, ও সূর্যোদয় হেমাঙ্গ বিশ্বাসের অনুবাদে “আমরা করবো জয়” গানটি কোরাসের মাধ্যমে পরিবেশন করেন। জনপ্রিয় ভাটিয়ালি গান, “কলকল, ছলছল, নদী করে টলমল” দিয়ে শিল্পী কনক চাঁপা কায়স্থগীরের সুরের মূর্ছনা হৃদয়-মনে শান্তির পরশ ছড়িয়ে দেয়।
শিশুশিল্পী আইয়ান-অর- রশীদ জনপ্রিয় দেশাত্মবোধক গান “সূর্যোদয়ে তুমি, সূর্যাস্তেও তুমি”, নয়নিকা এবং রুদ্র “গ্রীষ্ম বর্ষা শরৎ হেমন্ত” গানগুলো গেয়ে উপস্থিত সবাইকে বিমোহিত করেন। এরপর পর্যায়ক্রমে একক সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে কনক চাঁপা কাইস্তগীরের (এই পদ্মা, এই মেঘনা…), সন্ধ্যা পালের (একদিন ঘুম ভেঙে জেগে দেখি/ কথা – বিনয় পাল) এবং কুমকুম কায়স্থগীরের (যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে) দর্শকের মনকে উদ্বেলিত করেন।
বিনয় পাল ও রিচাড পালমা তবলার সুরেলা বীটের ঝংকার তুলেন। সকল শিল্পীর কোরাসে “সাধের লাউ বানাইলো মোরে বৈরাগী” গানটি পরিবেশনের মাধ্যমে এই পর্বের পরিসমাপ্তি ঘটে।
পরবর্তী পর্বে, ক্ষুদে মেধাবী শিশুরা (নয়নিকা, রুদ্র, ইযহান, আইয়ান, সূর্যোদয়) চমৎকার ছড়া ও গান পরিবেশন করে সবাইকে বিমোহিত করে। এরপর মো. জোহা সদ্য প্রয়াত কবি হেলাল হাফিজের স্মরণে তাঁর সেরা কবিতার অংশ বিশেষ এবং সুপর্ণা তালুকদার “স্বাধীনতা তুমি” আবৃত্তি করেন। সাহি এবং সামারার যুগল ক্লাসিক নৃত্য অনুষ্ঠানে বাড়তি মাত্রা যোগ করে। শেষ পর্বে বুদ্ধিদীপ্ত কুইজ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে।
সবশেষে, ক্রিষ্টফার পালমা সবার আন্তরিক সহযোগিতা এবং স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি আনন্দময় করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানে সার্বিক সহযোগিতার জন্য জুয়েল আইচ, ওমর জাহিদ এবং সুদামকে বিশেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। অনুষ্ঠানের দুই পর্বের পরে বাংলাদেশ কালচারাল সোসাইটি ক্যানটাবেরির আয়োজনে মজাদার দেশীয় খাবার পরিবেশন করা হয়।