রাউজান (চট্টগ্রাম) : দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে আবারও মৃত ডলফিন উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় নদীর রাউজান অংশের আজিমের ঘাট এলাকায় ভাসমান অবস্থায় ডলফিনটি উদ্ধার করা হয়।
মৃত ডলফিনটির দৈর্ঘ্য ৪৫ ইঞ্চি এবং ওজন প্রায় সাড়ে ১৩ কেজি।
স্থানীয়রা জানান, মৃত ডলফিনটির ভূড়ি বের হয়ে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, যান্ত্রিক নৌযানের পাখার আঘাতে ডলফিনটির মৃত্যু হয়েছে। হালদা পাড়ের ইটভাটাগুলোর ব্যবহৃত যান্ত্রিক নৌযান বন্ধের দাবি জানিয়েছেন তারা।
রাউজান উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, “নদীতে মৃত ডলফিন ভাসতে দেখে স্থানীয়রা ফোন দিলে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে অর্ধগলিত অবস্থায় মৃত ডলফিনটি উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে মাটি চাপা দিয়েছি। আমার ধারণা, কর্ণফুলী নদীর জাহাজ ও অন্যান্য নৌযানের তেলের দূষণের কারণে মৃত্যু হতে পারে। হালদার মাছ, ডলফিন বা নদীর পরিবেশ রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত জনবল এবং নিজস্ব নৌযান নেই। এসব ব্যবস্থা করা গেলে হালদা সুরক্ষায় কাজ করতে সহজ হবে।”
হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “হালদা নদীর শাখা খালগুলোর দূষণের ফলে ডলফিন মারা যেতে পারে। হালদা জলজ বাস্তুতন্ত্রকে মাছ, ডলফিন ও অন্যান্য প্রাণীর নিরাপদ আবাসস্থল নিশ্চিত করতে দূষণসহ সব ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।”
চলতি বছর হালদায় এ নিয়ে মোট চারটি মৃত ডলফিন পাওয়া গেল। আর গত সাড়ে পাঁচ বছরে হালদায় পাওয়া মৃত ডলফিন এর সংখ্যা বেড়ে হল ৪৩টি।
এর আগে চলতি বছরের ১ জুলাই রাতে রাউজান উপজেলার আজিমের ঘাট অংশে একটি মৃত ডলফিন ভেসে যেতে দেখেন স্থানীয় এক বাসিন্দা।
দক্ষিণ এশিয়ায় কার্প জাতীয় মাছের অন্যতম প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী। এই নদী দেশের মিঠাপানির ডলফিনেরও অন্যতম প্রধান বিচরণ ক্ষেত্র।
এক সময় কর্ণফুলী নদীতেও ডলফিনের আনাগোনা ছিল। তবে দূষণের কারণে এখন তা খুবই কমে গেছে।
