শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ৫ মাঘ ১৪৩১

প্রিয় রণজিৎদা, ৫ কপি একুশে পত্রিকা আর সম্মানিটা কাকে দেবো ?

| প্রকাশিতঃ ২৩ জুন ২০১৬ | ৯:৫৩ অপরাহ্ন

:: আজাদ তালুকদার ::

Ranjit Biswasলেখকের সম্মানীর বিষয়টা মনে রাখতে হবে, না হলে লেখক কিন্তু মাইন্ড করবে। একুশে পত্রিকা’র ঈদসংখ্যায় একটি লেখা পাঠানোর পর পরশু (মঙ্গলবার) দুপুরে লেখার প্রুফ নিয়ে কথা বলার ফাঁকে অনেকটা হাস্যরস করে আমাকে কথাটি বলছিলেন প্রিয় রণজিৎদা। রণজিৎদার ‌‌’সংলাপগল্প : মিস্টার কালপ্রিট’ একুশে পত্রিকার এবারকার ঈদ সংখ্যার অন্যতম আকর্ষণ।

বলেছিলেন আগের মতো এখন তিনি আর বসতে পারেন না। ঈদ উপলক্ষে এটাই তার শেষ লেখা। তাই সময় দিয়ে, যত্ন করে গল্পটি লিখেছিলেন দাদা। হাতের লেখা স্ক্রিপ্টটি সংগ্রহ করতে দাদার লালমাটিয়ার বাসায় আমার ভাগনে রুবেলকে পাঠিয়েছিলাম। তার কাছে হাতের স্ক্রিপ্টটি দিয়ে ফোন করলেন দাদা। বললেন, আজাদ- এই আধুনিকতার যুগেও আমি বড় অনাধুনিক। কম্পিউটারে লিখতে পারি না, কষ্ট করে টাইপ করে নিও। এই অক্ষমতার জন্য আমাকে ক্ষমা করো !

ভাবি, এই অনাধুনিক (!) মানুষটিই যখন কথা বলেন, তখন সেটি প্রার্থনার মতো হয়ে যায়, এই অনাধুনিক (!) মানুষটি যখন বক্তৃতা করেন তখন সেটি সুর হয়ে যায়, এই অনাধুনিক মানুষটি যখন লিখেন তখন দারুণ সুখপাঠ্য হয়ে সেটি মানুষের মনের খোরাক হয়ে যায়, এই অনাধুনিক (!) মানুষটি যখন সিনিয়র সচিব হয়েও সততার পাঠশালায় শ্রেষ্ঠত্বের তকমা ধরে রাখেন- তখন একবাক্যে বলতেই হবে তথাকথিত এই আধুনিক যুগে রণজিৎ বিশ্বাসের মতো একজন অনাধুনিক (!) মানুষেরই বড় বেশি প্রয়োজন ছিল।

হ্যাঁ দাদা, একুশে পত্রিকার মুদ্রণশেষে বাইন্ডিং চলছে। আর একটা দিন হাতে পেলেই আপনার কাছে পত্রিকাটা পৌঁছে যেতো। কিন্তু সেই সুযোগটি আর দিলেন না। কোথায় দেব, কার কাছে দেবো ক্ষুদ্র ‘সম্মানি’ আর পাঁচ কপি একুশে তাও বললেন না! যেখানেই থাকুন ভালো থাকুন।

নোট : সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব, খ্যাতিমান লেখক ড. রণজিৎ কুমার বিশ্বাস আর নেই। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি আকষ্মিক মৃত্যুবরণ করেন।