বুধবার, ৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১

মংডু দখল করে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ২৭০ কিলোমিটার নিয়ন্ত্রণ নিলো আরাকান আর্মি

প্রকাশিতঃ ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১:৪১ অপরাহ্ন


মংডু, মিয়ানমার: মিয়ানমারের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী গুরুত্বপূর্ণ শহর মংডু দখলের দাবি করেছে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। কয়েক মাস ধরে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সাথে তীব্র লড়াইয়ের পর রোববার (৮ ডিসেম্বর) শহরটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয় তারা।

এই ঘটনার ফলে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের প্রায় ২৭০ কিলোমিটার এলাকা আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে বলে জানা গেছে। মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী সোমবার (৯ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মংডু শহরের বাইরে অবস্থিত বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন নং ৫, যা জান্তা সরকারের শেষ অবশিষ্ট সীমান্ত ঘাঁটি ছিল, তাও আরাকান আর্মি দখল করে নিয়েছে।

এর আগে আরাকান আর্মি জানায়, ঘাঁটি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় তারা আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি (এআরএ), আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) সহ সরকার সমর্থিত রোহিঙ্গা মিলিশিয়াদের উপর আক্রমণ চালায়।

রাখাইনের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মংডুতে সংঘর্ষের পর আরাকান আর্মি প্রায় ৮০ জন রোহিঙ্গা বিদ্রোহীসহ সরকারি সৈন্যদের গ্রেপ্তার করেছে। এদের মধ্যে রয়েছেন সামরিক অপারেশন কমান্ড ১৫ এর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুন।

উল্লেখ্য, গত মে মাসের শেষের দিকে আরাকান আর্মি মংডু আক্রমণ শুরু করে।

ইরাবতী বলছে, আরাকান আর্মি এখন বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের তিনটি শহরেরই নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করছে। এগুলো হচ্ছে— রাখাইন প্রদেশের মংডু ও বুথিডাং এবং চিন প্রদেশের পালেতোয়া। পালেতোয়ার সঙ্গে ভারতের সীমান্তও রয়েছে।

রাখাইনে যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী একজন সামরিক বিশ্লেষক বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য পুনঃস্থাপন পশ্চিমাঞ্চলীয় এই প্রদেশে বসবাসকারী মানুষের দুর্দশা কমাতে সাহায্য করবে।

অন্যদিকে রাখাইনে ২০ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন বলে জাতিসংঘ গত মাসে জানিয়েছে।

জান্তা বাহিনী এই প্রদেশের দিকে যাওয়ার রাস্তা ও নৌপথ অবরোধ করেছে এবং আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তাসহ খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধ সরবরাহেও বাধা দিয়েছে। ওই বিশ্লেষক আরও বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার রাখাইন প্রদেশের জটিল রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান করতে চাইলে জাতিগত সেনাবাহিনীর (আরাকান আর্মি) সাথে অর্থপূর্ণ সংলাপে যুক্ত হতে হবে।

আরাকান আর্মি এখন দক্ষিণ রাখাইনের গয়া, তাউনগুপ এবং আন শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য লড়াই করছে বলেও জানিয়েছে ইরাবতী।