জাতিসংঘে চিন্ময় দাসের গ্রেফতার প্রসঙ্গে ভুল ব্যাখ্যার জবাব দিল বাংলাদেশ


আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চিন্ময় দাসের গ্রেফতারকে জাতিসংঘে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার সংখ্যালঘু ইস্যু সংক্রান্ত জাতিসংঘ ফোরামে এ প্রসঙ্গে সরকারের স্থিতি স্পষ্ট করেছেন জেনেভায় জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মো. আরিফুল ইসলাম।

তিনি বলেন, “অত্যন্ত হতাশার সঙ্গে আমরা লক্ষ করছি, কিছু বক্তা চিন্ময় দাসের গ্রেফতারকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। প্রকৃতপক্ষে তাকে নির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।”

স্থায়ী প্রতিনিধি আরও উল্লেখ করেন যে, সম্প্রতি একজন মুসলিম আইনজীবীকে নৃশংসভাবে হত্যা করার পরেও সরকারের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপ এবং সব ধর্মের নেতাদের সমর্থন শান্তি বজায় রাখতে এবং অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সহায়তা করেছে।

তিনি বলেন, “আমাদের সরকার সতর্ক রয়েছে এবং যে কোনো মূল্যে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার ক্ষুণ্ন করার যে কোনো প্রচেষ্টা ব্যর্থ করতে অবিলম্বে কাজ চালিয়ে যাবে।”

৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে সংঘটিত সহিংসতার প্রসঙ্গ টেনে তারেক মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, “ওই সহিংসতার মূলে ছিল রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত কারণ, সাম্প্রদায়িক নয়। ওই সহিংসতা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পক্ষপাতদুষ্ট রাজনৈতিকভাবে অনুগত লোকদের প্রভাবিত করেছিল; তাদের প্রায় সবাই মুসলমান এবং অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর ছিল মাত্র কয়েকজন। সংখ্যালঘুদের ওপর কোনো উদ্দেশ্যমূলক আক্রমণ হয়নি।”

তিনি আরও বলেন, “জুলাই মাসে গণআন্দোলনের পর আমাদের দীর্ঘ ঐতিহ্যবাহী সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অনুসরণ করে কীভাবে সমগ্র বাংলাদেশ তার সংখ্যালঘুদের রক্ষায় এগিয়ে এসেছিল, তা বিশ্ব প্রত্যক্ষ করেছে। অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে আমাদের সরকার সব ধর্মের মানুষের কাছ থেকে অপ্রতিরোধ্য এবং অভূতপূর্ব সমর্থন পেয়েছে।”

বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি জোর দিয়ে বলেন যে, ধর্মীয় পরিচয় নির্বিশেষে প্রত্যেক বাংলাদেশির নিজ নিজ ধর্ম পালন বা স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশের অধিকার রয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মূল ভিত্তি।

সংখ্যালঘু নির্যাতনের ভুয়া সংবাদ ছড়ানোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দুর্ভাগ্যবশত, বাংলাদেশের জনগণ যখন ধর্মীয় সম্প্রীতির গৌরবময় উদাহরণ স্থাপন করছিল, তখন আমরা সংখ্যালঘু নিপীড়নের বিষয়ে অতিরঞ্জিত, ভিত্তিহীন ও ভুয়া খবর এবং স্বার্থান্বেষী মহলের ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া লক্ষ করেছি। দুর্ভাগ্যবশত, আমরা এই ফোরামেও এটি দেখেছি। এই ধরনের অনেক অপপ্রচারকে বৈশ্বিক গণমাধ্যম উড়িয়ে দিয়েছে। আমাদের সরকার বাস্তব পরিস্থিতি দেখতে বাংলাদেশ সফরে আসা বিদেশি সাংবাদিকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।”