আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দখলদার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম শক্তিশালী দেশ ইরান। অক্টোবরের ১ তারিখে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ১৮১টি ব্যালিস্টিক মিসাইল ছোড়ে দেশটি। এরপর ইসরায়েলও পাল্টা হামলার হুমকি দিয়ে আসছে। আর ইসরায়েলের এই সম্ভাব্য হামলা নিয়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে তেহরান।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলার পরিধি যদি তীব্র হয় তাহলে ইরান যুদ্ধে জড়াবে। হামলার পরিধি কম হলে কিছু নাও করতে পারে। তারা মূলত চাইছে যুদ্ধ যেন না বাধে। তবে নিজ সেনাদের যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে দেশটি।
সংবাদমাধ্যমটিকে চার ইরানি কর্মকর্তা টেলিফোন সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, প্রধান ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি সেনাবাহিনীকে ইসরায়েলি হামলার জবাব দিতে একাধিক পরিকল্পনা সাজানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
তারা বলেছেন, ইসরায়েল যদি হামলা চালায় এবং তাদের বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়। তাহলে ইরান নিশ্চিতভাবে পাল্টা হামলা চালাবে। কিন্তু ইসরায়েল যদি শুধুমাত্র তাদের ঘাঁটি, মিসাইল ও ড্রোন ঘাঁটিতে ‘সীমিত’ হামলা চালায় তাহলে তারা পাল্টা হামলা থেকে বিরত থাকবেন।
তবে এই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সুপ্রিম নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি নির্দেশ দিয়েছেন যদি তাদের তেল, বিদ্যুৎ এবং পারমাণবিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালায় অথবা উচ্চপদস্থ কোনো কর্মকর্তাকে হত্যা করে তাহলে ইরান বড় পাল্টা হামলা চালাবে।
এই চার কর্মকর্তার মধ্যে দুজন দেশটির চৌকস বাহিনী বিপ্লবী গার্ডের সদস্য। তারা বলেছেন, ইসরায়েলি হামলায় ইরানের বড় কোনো ক্ষতি হলে পাল্টা হামলা হিসেবে ইসরায়েলে এক হাজারের বেশি ব্যালিস্টিক মিসাইল ছোড়ার পরিকল্পনা বিবেচনায় রাখা হচ্ছে।
এছাড়া পাল্টা হামলার অংশ হিসেবে প্রক্সি বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি করা হবে, পারস্য সাগর এবং হরমুজ প্রণালি দিয়ে তেল সরবরাহ এবং পরিবহনে বাধা দিয়ে বিশ্বব্যাপী অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হবে।
নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ইরান প্রকাশ্যে বলছে তারা যুদ্ধ চায় না। কিন্তু ইসরায়েল যদি বড় ধরনের কোনো হামলা চালায় তখন চাইলেও দেশটির নেতারা বসে থাকতে পারবেন না। কারণ তারা সাধারণ মানুষের কাছে নিজেদের দুর্বল হিসেবে দেখতে চান না। বিশেষ করে হামাস ও হিজবুল্লাহর একাধিক নেতা হত্যার শিকার হওয়ার পর ইরানি নেতারা নিজেদের শক্তিশালী হিসেবে প্রদর্শনের চেষ্টা করবেন।