আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি এলডিপির


ঢাকা : লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি) প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপের পর আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে। শনিবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম সাংবাদিকদের জানান, “দেশের ১৮ কোটি মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার কারণে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার অধিকার নেই।”

অলি আহমদ বলেন, “আমরা আলোচনা করেছি এবং লিখিত প্রস্তাব দিয়েছি। প্রথমবার যখন এসেছিলাম, তখন ১০৩টি প্রস্তাব দিয়েছিলাম। আজ আরও ২৩টি প্রস্তাব দিয়েছি। আমাদের দল কাউকে সুবিধা দেওয়ার জন্য কোনো প্রস্তাব দেয়নি। যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তা বাংলাদেশের জনগণের প্রয়োজনের ভিত্তিতে। এর মধ্যে সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচন, সুন্দর প্রশাসন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে মানুষের কষ্টের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।”

তিনি বলেন, “জুলাই-আগস্টে আমরা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একটি যুদ্ধের মধ্যে ছিলাম। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধের কারণ হলো, তারা অন্যায়ভাবে পুলিশ এবং প্রশাসনকে ব্যবহার করেছে এবং জনগণের সঙ্গে মুখোমুখি হয়েছে। দেশের পরিস্থিতি ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে, যা দুর্নীতির স্রোত বহন করছে।”

এলডিপি নেতা আরও বলেন, “জুলাই-আগস্টে আমাদের বহু ছেলেমেয়ে হতাহত হয়েছে, দেড় হাজারের ওপরে আমাদের ছেলেমেয়ে মারা গেছে। অনেকে বলছে, এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। বহু লাশ পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে এবং ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষ বিভিন্নভাবে আহত হয়েছে।”

অলি আহমদ ১৯৭১ সালে জামায়াতের ভূমিকার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “জামায়াত মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল এবং পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। সেদিন আমরা তাদের নিষিদ্ধ করেছিলাম। এখন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কারণ নেই? আওয়ামী লীগ ১৮ কোটি মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, তাদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই।”

সংস্কার কমিশন গঠন প্রসঙ্গে অলি আহমদ বলেন, “কমিশনকে রূপরেখা তৈরির দায়িত্ব দিতে হবে। এই রূপরেখা তৈরি হলে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে মতবিনিময় করে নতুন খসড়া তৈরি করা হবে। খসড়া শেষে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হবে। ওয়ার্কশপের পর রাজনীতিবিদদের কাছে সংস্কারের কপি দেওয়া হবে, যাতে তারা লিখিতভাবে মতামত প্রদান করতে পারে।”

নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ঘরটা আগে বানাই, পরে চিন্তা করব কোন রুমে থাকব। এখন মাত্র ইট ঢালাই শুরু হয়েছে।”

এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য নূরুল আলম তালুকদারও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এই সংলাপে উপস্থিত ছিলেন।