আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরানের এলিট ফোর্স কুদস বাহিনীর প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইসমাইল কানির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হওয়ার পর তিনি লেবাননে গিয়েছিলেন।
তবে গত সপ্তাহে বৈরুতে ইসরায়েলি হামলার পর থেকে তিনি যোগাযোগের বাইরে রয়েছেন। সোমবার (৭ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের কুদস ফোর্সের কমান্ডার ইসমাইল কানি গত সপ্তাহের শেষের দিকে বৈরুতে হামলার পর থেকে যোগাযোগের বাইরে রয়েছেন বলে ইরানের দুই সিনিয়র নিরাপত্তা কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন।
গত মাসে ইসরায়েলি বিমান হামলায় হিজবুল্লাহ নেতা সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হওয়ার পর তিনি লেবাননে গিয়েছিলেন।
একজন কর্মকর্তা বলেছেন, লেবাননে যাওয়ার পর কানি বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলীতে ছিলেন, যা দাহিয়েহ নামে পরিচিত। গত সপ্তাহে হিজবুল্লাহর সিনিয়র নেতা হাশেম সাফিউদ্দীনকে লক্ষ্য করে সেখানে ইসরায়েল হামলা করেছে বলে জানা গেছে। তবে ওই কর্মকর্তা বলেছেন, তিনি সেখানে সাফিউদ্দীনের সাথে দেখা করছিলেন না।
হিজবুল্লাহর একজন কর্মকর্তা বলেছেন, গত বৃহস্পতিবার বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলিতে বোমা হামলার পর সাফিউদ্দীনের সন্ধানে অগ্রসর হতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। কর্মকর্তারা বলেছেন, অনুসন্ধান শেষ হলেই কেবল সাফিউদ্দীনের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা ঘোষণা করবে হিজবুল্লাহ।
মূলত সাফিউদ্দীনকে হাসান নাসরাল্লাহর সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত ২৭ সেপ্টেম্বর দাহিয়েহতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন নাসরাল্লাহ।
ইরানি কর্মকর্তা বলেছেন, ইরান এবং হিজবুল্লাহ কুদস বাহিনীর প্রধান ইসমাইল কানির সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়নি। ইরান-সমর্থিত লেবানিজ গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর সময় দাহিয়েহে একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে ইসরায়েল।
দ্বিতীয় ইরানি কর্মকর্তা আরও বলেছেন, নাসরাল্লাহ হত্যাকাণ্ডের পর ইসমাইল কানি লেবাননে গিয়েছিলেন এবং সফিউদ্দীনের বিরুদ্ধে হামলার পর থেকে ইরানি কর্তৃপক্ষ তার সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়নি।
অন্যদিকে বৈরুতে ইসরায়েলি হামলায় কানি নিহত হতে পারে এমন প্রতিবেদন সম্পর্কে জানতে চাইলে ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাদাভ শোশানি বলেন, হামলার ফলাফল এখনও মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ইসরায়েল গত সপ্তাহের শেষ দিকে বৈরুতে হিজবুল্লাহর গোয়েন্দা সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছে। তিনি সাংবাদিকদের সাথে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, “যখন আমাদের সেই হামলার আরও সুনির্দিষ্ট ফলাফল আসবে, আমরা তা জানাব। সেখানে কে ছিল এবং কে ছিল না তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে।”
প্রসঙ্গত, ইরাকে মার্কিন ড্রোন হামলায় জেনারেল কাসেম সোলেইমানির মৃত্যুর পর ইরানের এলিট ফোর্স কুদস বাহিনীর নতুন কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন ইসমাইল কানি।
মূলত এই পদে আসার আগে কমান্ডার কাসেম সোলেইমানির বহুদিনের সহযোদ্ধা ও কুদস বাহিনীর ডেপুটি ছিলেন তিনি। এছাড়া কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ পেয়েই সোলেইমানির হত্যাকাণ্ডের জন্য “চরম প্রতিশোধ” নেওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছিলেন ইসমাইল কানি।