শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

মিয়ানমারে নির্বাচন : জনশুমারি শুরু করল জান্তা

প্রকাশিতঃ ৩ অক্টোবর ২০২৪ | ৪:১৭ অপরাহ্ন


আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ২০২৫ সালের নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে দেশজুড়ে জনশুমারির কাজ শুরু হয়েছে মিয়ানমারে। জান্তাবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বয়কটের মধ্যেই বুধবার থেকে শুমারি শুরু হয়েছে দেশটিতে।

বার্তা সংস্থা এএফপিকে এ তথ্য নিশ্চিত করে ক্ষমতাসীন জান্তার এক মুখপাত্র বলেন, “স্কুল শিক্ষক, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী পুলিশ ও সেনাসদস্যদের একটি সম্মিলিত দল শুমারির যাবতীয় কাজ পরিচালনা করছে। তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারটি দেখভাল করছে সদ্য সামরিক প্রশিক্ষণ শেষ করা জুনিয়র সেনাসদস্যরা।”

মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতি জানিয়েছে, রাজধানী নেইপিদোসহ অন্যান্য ছোট-বড় শহর ও গ্রামগুলোর বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন সদস্যরা শুমারি পরিচালনাকারী দলের সদস্যরা। জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর হামলার আশঙ্কা থাকায় শুমারি পরিচালনাকারী দলের সদস্যদের জন্য কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে সামরিক সরকার। শিডিউল অনুযায়ী আগামী ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে শুমারির কাজ।

মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য চিনের জান্তাবিরোধী সশস্ত্র রাজিনৈতিক গোষ্ঠী চিন ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স (সিবিএ) বুধবার এক বিবৃতিতে জনশুমারি কার্যক্রমকে জান্তার ‘আরও দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কৌশল’ বলে উল্লেখ করেছে। সেই সঙ্গে জনগণকে শুমারিতে অংশ নিলে ‘ফলাফল ভালো হবে না’ বলে সতর্কবার্তাও দিয়েছে সিবিএ।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “সিবিএ এই মর্মে সবাইকে অবগত করছে আমাদের এলাকার কেউ যদি মিলিটারি কাউন্সিলের জনশুমারির কাজে অংশ নেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

উল্লেখ্য, গত ২৮ জুন সামরিক বাহিনীর একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে গিয়েছিলেন জান্তাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং। সেই অনুষ্ঠানে তিনি ঘোষণা দেন, ২০২৫ সালে নির্বাচন হবে মিয়ানমারে।

এর আগেও অবশ্য একাধিকবার নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন জেনারেল মিন অং হ্লেইং। সর্বশেষ গত বছর জুলাই মাসে হ্লেইং বলেছিলেন, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে হবে মিয়ানমারে।

কিন্তু প্রতিশ্রুতি পালন করেননি তিনি বা তার নেতৃত্বাধীন সামরিক সরকার। এবারও তিনি প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারবেন কি না— তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ গত ডিসেম্বর থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রদেশে ব্যাপকমাত্রায় তৎপর হয়ে উঠেছে জান্তাবিরোধী বিভিন্ন সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী। এসব গোষ্ঠীর আক্রমণের মুখে অনেক অঞ্চলেই পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছে সেনা বাহিনী।

আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমানে মিয়ানমারের মোট ভূখণ্ডের অন্তত এক পঞ্চমাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে জান্তাবিরোধী বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী।