শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

মিছিলে যাননি শিক্ষক, তাই গণশিক্ষা কেন্দ্র বন্ধ করে দেন সাবেক এমপি

প্রকাশিতঃ ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৩:৫৪ অপরাহ্ন


বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : বাঁশখালীতে ওলামা লীগের মিছিলে যোগদান না করায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গণশিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষক শফকত হোসাইন চাটগামীর বেতন বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বাঁশখালীর সাবেক এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগী শিক্ষক শফকত হোসাইন চাটগামী বাঁশখালী জলদী দারুল কারীম মাদ্রাসা মসজিদ কেন্দ্রে কর্মরত শিক্ষক ছিলেন।

জানা যায়, ২০১৫ সালে বাঁশখালী পৌরসভার জলদী দারুল কারীম মাদ্রাসায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গণশিক্ষা কেন্দ্র হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হয়। যার আইডি নং ২২৯৬৮০৮৯, সোনালী ব্যাংক বাঁশখালী শাখার একাউন্ট নং ১২০২১০১০১৪০১৮। অনুমোদনের পর থেকে ওই কেন্দ্রের শিক্ষক হিসেবে বেতন-ভাতা উত্তোলন করেন শফকত হোসাইন চাটগামী।

তিনি ওই গণশিক্ষা কেন্দ্রের একজন নিয়মিত শিক্ষক হলেও ওলামালীগের মিছিলে অংশ না নেওয়ায় তৎকালীন এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর নির্দেশে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মডেল কেয়ারটেকার ওলামা লীগের উপজেলা সভাপতি মাওলানা আকতার হোসেন ষড়যন্ত্র করে বেতন-ভাতা বন্ধ করে দেন।

সর্বশেষ ২০২২ সালের ১০ মার্চ তারিখে ব্যাংকে তার বেতন-ভাতা জমা হয়। কিন্তু ২০২৩ সালেও শফকত হোসেন চাটগামীকে ফাউন্ডেশনের বই-উপকরণ দেওয়া হয়। বিভিন্ন বৈঠক ও সভায় তার স্বাক্ষর নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষক শফকত হোসাইন চাটগামী বলেন, “করোনার সময় বাঁশখালীতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের হয়ে আমি লাশ দাফনের কাজে যুক্ত ছিলাম। বিভিন্ন সময় ওলামা লীগের মিছিল-সমাবেশে যোগ দিতে সবার মতো আমাকেও চাপ দেওয়া হতো। মিছিলে না যাওয়ায় বাঁশখালী মডেল কেয়ারটেকার মাওলানা আকতার হোসেন স্বৈরাচারী কায়দায় আমার বেতন বন্ধ করে দিলেও আমাকে কোনো নোটিশ দেননি। আমি এই বিষয়ে তাকে জানালে সে আমাকে সাবেক এমপি মোস্তাফিজুর রহমানের নির্দেশে আমার বেতন বন্ধ রয়েছে বলে জানায়।”

এদিকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গণশিক্ষা কেন্দ্র দারুল কারীম মাদ্রাসায় বহাল রেখে ওই শিক্ষক তার বেতন-ভাতা চালু করার পাশাপাশি আটকে রাখা বেতন-ভাতা ফিরিয়ে দিতে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তারকে অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি ইতিমধ্যেই ধর্ম উপদেষ্টা ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে জানানো হয়েছে।

অভিযোগ প্রসঙ্গে জানার জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাঁশখালী শাখার মডেল কেয়ারটেকার মাওলানা আকতার হোসাইনকে ফোন দেওয়া হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেসমিন আক্তার বলেন, “আমি এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।”