খালেদা জিয়ার সফরে মনজুর আলমের শুভেচ্ছা?

চট্টগ্রাম : ২০১০ সালে বিএনপির সমর্থনে চট্টগ্রামের মেয়র নির্বাচিত হয়ে দলীয় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেছিলেন আওয়ামী পরিবারের সন্তান এম মনজুর আলম। ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কারচুপির অভিযোগ এনে ভোট বর্জনের পাশাপাশি রাজনীতিও ছাড়ার ঘোষণা দেন স্বল্পভাষী এ শিল্পপতি।

বছর খানেক রাজনীতির বাইরে থাকলেও গত বছর ১৫ আগস্ট মহিউদ্দীন চৌধুরীকে সাথে নিয়ে ঘটা করে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠান পালন করে ফের আলোচনায় আসেন আওয়ামী লীগের ব্যানারে টানা ১৫ বছর কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালনের পর বিএনপির ব্যানারে মেয়র হওয়া মনজুর। তখন গণমাধ্যম থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চাউর হয় নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ‘গুরু’ এ বি এম মহিউদ্দীন চৌধুরীর হাত ধরেই ফের আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ফিরছেন ‘শিষ্য’ মনজুর আলম! এমনকি কোনও প্রকার লুকোচুরি না করে আওয়ামী লীগে ফেরার বিষয়টি স্বীকারও করেছিলেন তিনি।

শনিবার রাতে রোহিঙ্গাদের সাহায্যার্থে উখিয়া যেতে বিশাল বহর নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন চট্টগ্রাম প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরছে বিএনপি চেয়ারপারসনকে স্বাগত জানিয়ে মনজুর আলমের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানানো ব্যানার! ব্যানারে তার পরিচয় উল্লেখ আছে সাবেক মেয়র ও চেয়ারপার্সনের সাবেক উপদেষ্টা হিসেবে! মনজুরের ছবি ছাড়াও বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত জিয়াউর রহমান ও দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি শোভা পাচ্ছে সেই ব্যানারে!

তবে এটি কি শুধু ভার্চুয়াল নাকি নগরীর কোথাও টাঙানো হয়েছে সেটা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে মনজুর আলমের এই ‘শুভেচ্ছা ব্যানারটি’ নিয়ে ভার্চুয়াল জগতে বিশেষ করে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

বেশির ভাগ লোক ব্যানারটি শেয়ার করে মহিউদ্দিন চৌধুরীকে ‘মুরুব্বী’ ইঙ্গিত করে মনজুরকে তার প্রোডাক্ট বলে বিদ্রুপ করছেন । অনেকে সেটি শেয়ার করে এর সত্যতাও যাচাই করতে চাইছেন। কেউ কেউ অপপ্রচার বলেও দাবি করছেন।

তবে এ বিষয়ে মনজুর আলম কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। রোববার দুপুরে টেলিফোনে একুশে পত্রিকার পক্ষ থেকে পুরো বিষয়টি শোনার পর ‘আমার কোনো মন্তব্য নেই’ বলেই ফোনের লাইন কেটে দেন মনজুর আলম।

যদিও বা বিএনপি নেত্রীর চট্টগ্রাম আগমনকে কেন্দ্র করে কোনো প্রস্তুতি সভায় বিএনপির সাবেক মেয়র ও উপদেষ্টা মনজুর আলমের কোনো উপস্থিতি ছিল না।

এর আগে ২০১৩ সালে বিএনপি চেয়ারপারসনের চট্টগ্রাম আগমনের সময় তৎকালীন মেয়র মনজুর আলম খালেদা জিয়াকে নগরীর প্রবেশদ্বার সিটি গেট থেকে বরণ করার পাশাপাশি নিজ বাসা থেকে ত্রিশ পদের খাবার তৈরি করে খাইয়েছিলেন।

সাম্প্রতিক সময়ে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের বর্ধিত গৃহকর ইস্যুতে যাকে হারিয়ে মেয়র হয়েছিলেন সেই মহিউদ্দিন চৌধুরীর সাথে তাল মিলিয়ে চিঠিও দিয়েছিলেন মনজুর আলম। শুধু তাই নয়, গত সপ্তাহে নগর ১৪ দলের বৈঠকে মহিউদ্দিন চৌধুরীর বাসায় প্রস্তাবিত গৃহকরবিরোধী বৈঠকেও উপস্থিত ছিলেন আ জ ম নাছিরের কাছে চেয়ার হারানো সাবেক এ মেয়র।