ঢাকা : রাজধানীতে নাশকতার অভিযোগে দায়ের করা এক মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আপিল বিভাগে বহাল রাখা হয়েছে।
সোমবার (১৯ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে এ আদেশ দেন।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল জানিয়েছেন, এ আদেশের পর আসলাম চৌধুরীর মুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৫ জানুয়ারি হাইকোর্ট আসলাম চৌধুরীকে এই মামলায় জামিন দিয়েছিলেন। তবে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত সেই জামিনাদেশ স্থগিত করে।
২০১৬ সালের ১৫ মে সন্ধ্যায় রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা থেকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি-উত্তর) আসলাম চৌধুরী এবং তার ব্যক্তিগত সহকারী মো. আসাদুজ্জামান মিয়াকে আটক করে। এরপর তাদের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরদিন, ১৬ মে, ৫৪ ধারায় (মোসাদ কানেকশনে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের সন্দেহে) তাদের দু’জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পরে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার পর, ২৬ মে ২০১৬ সালে আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে গুলশান থানায় রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়। ডিবির ইন্সপেক্টর গোলাম রাব্বানী দণ্ডবিধির ১২০ (বি), ১২১ (৩) ও ১২৪ (এ) ধারায় এই মামলা করেন।
রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় বলা হয়, ২০১৬ সালের ৫ থেকে ৯ মার্চ পর্যন্ত আসলাম চৌধুরী ভারতে অবস্থানকালে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। অভিযোগ অনুযায়ী, এই বৈঠকের মাধ্যমে তিনি আইনানুগভাবে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেন, যা দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতার প্রতি হুমকি হিসেবে বিবেচিত হয়। এ ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আসামিরা দেশে সন্ত্রাস, নাশকতা এবং বিদ্বেষ সৃষ্টির উদ্যোগ নেন।
পরে, ওই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান আসলাম চৌধুরী। এরপর, তাকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
আসলাম চৌধুরী ২০০১ সালে চারদলীয় জোট ক্ষমতায় আসার পর জিয়া পরিষদের মাধ্যমে বিএনপির রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে সীতাকুণ্ড আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, তবে পরাজিত হন। ২০১৪ সালের ২৬ এপ্রিল তিনি উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হন। এর আগে তিনি দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। পরে তিনি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিবের পদে আসীন হন।