ঢাকা : বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ জুন) নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল এই পরোয়ানা জারি করেন।
মামুনুল হকের আইনজীবী এ কে এম ওমর ফারুক গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সোনারগাঁ থানায় দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় আদালত এই পরোয়ানা জারি করেছেন।
এর আগে শুক্রবার (৩ মে) সকাল ১০টার দিকে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। সে সময় বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা।
২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের বিরোধিতা করে কওমি মাদরাসা কেন্দ্রীক দলগুলোর সহিংসতার ঘটনায় আলোচিত ছিলেন মামুনুল।
সে সময় ঢাকায় বায়তুল মোকাররম, চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নারায়ণগঞ্জে হেফাজত কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এসব ঘটনায় প্রাণ হারান অন্তত ১৭ জন।
হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব থাকলেও সংগঠনে মামুনুলের প্রভাব ছিল ব্যাপক। সংগঠনের নীতি নির্ধারণে তার ভূমিকাও ছিল স্পষ্ট। একের পর এক ঘটনা শেষে ওই বছর ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে দ্বিতীয় স্ত্রীসহ মামুনুল হককে আটক করে স্থানীয়রা। এরপর অনুসারীরা হামলা করে মামুনুলকে ছিনিয়ে নেয়। পরে সোনারগাঁয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় হেফাজত কর্মীরা।
এরপর অভিযান শুরু করে পুলিশ। সহিংসতার ঘটনায় একাধিক মামলা করে পুলিশ। রিসোর্টে সঙ্গে থাকা তার দ্বিতীয় স্ত্রীও তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন। এছাড়া ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরের সহিংসতার মামলাগুলো পুনরুজ্জীবিত হয়।
পরে ১৮ এপ্রিল ঢাকার মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা থেকে গ্রেপ্তার হন মামুনুল। পরে কয়েক দফা রিমান্ডে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশ সে সময় বলেছিল, মামুনুল হক কওমি মাদরাসার ছাত্রদের ‘উসকানি দিয়ে মাঠে নামিয়েছিলেন’, তার উদ্দেশ্য ছিল ‘সরকার উৎখাত করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল’ করা।