ঢাকা : ভোটার তালিকা থেকে তদন্তে প্রমাণিত রোহিঙ্গাদের নাম কর্তনের নির্দেশনা দিয়ে সমগ্র কক্সবাজার জেলায় কতজন রোহিঙ্গাকে ভোটার করা হয়েছে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্টে।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) এ বিষয়ে এক আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন মোহাম্মদ সিদ্দিক উল্যাহ মিয়া। তিনি আদেশের বিষয়টি জানিয়েছেন।
আদালত থেকে বেরিয়ে মোহাম্মদ সিদ্দিক উল্যাহ মিয়া বলেন, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা কতজন রোহিঙ্গা কক্সবাজারে নাগরিকত্ব পেয়েছেন, ভোটার হয়েছেন তা খুঁজে বের করার নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন করা হয়েছিল। একইসঙ্গে ভোটার তালিকা থেকে রোহিঙ্গাদের বাদ দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছিল। এছাড়া ঈদগাঁও ইউনিয়নের ভোটার তালিকা হালনাগাদ না করা পর্যন্ত ঘোষিত তফসিলে নির্বাচন ও ভোটগ্রহণ বন্ধ বা স্থগিত রাখার আর্জি জানানো হয়েছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, নির্বাচন কমিশনের সচিব, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপরসহ সংশ্লিষ্টদের এতে বিবাদী করা হয়েছ।
স্থানীয় ভোটার হামিদুর রহমানের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া রিটটি দায়ের করেন।
এই আইনজীবী জানান, কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও ইউনিয়নের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিয়েছেন ৪০ জন রোহিঙ্গা। তাদের তালিকা যুক্ত করে রিট আবেদন করা হয়েছে। এছাড়া একই ইউনিয়নে কয়েকশ (সাড়ে তিনশ) রোহিঙ্গা নাগরিক হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলে তাদের নাগরিকত্ব থেকে বাদ দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটার তালিকা হালনাগাদ না করা পর্যন্ত ওই ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন স্থগিত রাখার আর্জি জানানো হয়েছে রিটে।
প্রসঙ্গত, তফসিল মতে বিগত ১৪ মার্চ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন পদে মোট ৩৮৪ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা করেছিলেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান ৪৮, সাধারণ সদস্য ২৬৪ ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৭২ জন প্রার্থী ছিল। তফসিল মতে ২ এপ্রিল থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের ওপর আপিল ও নিষ্পত্তি শেষ হয়েছে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল ৮ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ হয়েছে গত ৯ এপ্রিল পর্যন্ত। আগামী ২৮ এপ্রিল ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। এতে প্রাণভয়ে সীমান্ত পেরিয়ে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের রাখা হয়েছে কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার আশ্রয় শিবিরে।
রোহিঙ্গারা জানায়, আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নিয়ে ভিন্ন কোনো দেশে চলে গেছে। কেউ আবার রোহিঙ্গা ক্যাম্প ছেড়ে কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় ব্যবসা করছে।