ইসরায়েলে অস্ত্র বিক্রি বন্ধের প্রস্তাব পাস, পক্ষে বাংলাদেশ

একুশে ডেস্ক : ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধের আহ্বান জানিয়ে প্রস্তাব পাস হয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে। আজ শুক্রবার জেনেভায় ৪৭টি সদস্য দেশের ভোটাভুটির মাধ্যমে এই প্রস্তাব পাস হয়। প্রস্তাবে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার আহ্বানও জানানো হয়েছে। তবে ইসরায়েল ওই প্রস্তাবকে একটি ‘বিকৃত খসড়া’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে।

এ বিষয়ে আল-জাজিরা জানিয়েছে, উত্থাপিত প্রস্তাবের পক্ষে ৪৭টি দেশের মধ্যে ২৮টি দেশই ভোট দিয়েছে। বিপক্ষে ভোট দিয়েছে মাত্র ৬টি দেশ। আর ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল ১৩টি দেশ।

এর মধ্য দিয়ে জাতিসংঘের অধিকার বিষয়ক শীর্ষ সংস্থাটি প্রথমবারের মতো ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছে। তবে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত মিরাভ ইলন শাহার এই প্রস্তাবকে মানবাধিকার পরিষদ এবং জাতিসংঘের জন্য একটি কলঙ্ক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি মানবাধিকার পরিষদকে দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলি জনগণের প্রতি বিরূপ মনোভব এবং হামাসকে রক্ষা করার অভিযোগ করেছেন।

দৃঢ় শব্দযুক্ত ওই প্রস্তাবটিতে ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি, হস্তান্তর এবং পরিবর্তন বন্ধ করার জন্য আহ্বান জানানো হয়। গাজায় ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিয়ে ইসরায়েল ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বলেও অভিযোগও করা হয়েছে। জোর দিয়ে বলা হয়েছে—গাজায় গণহত্যার একটি সম্ভাব্য ঝুঁকি রয়েছে বলে গত জানুয়ারিতে রায় দিয়েছে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত।

ইসরায়েলের আইনজীবীরা সে সময় গাজায় ইচ্ছাকৃতভাবে মানবিক দুর্ভোগ সৃষ্টির অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন এবং বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য ইসরায়েলি প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেছিলেন।

ইসলামি দেশগুলোর সংস্থা ওআইসির পক্ষ থেকে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে প্রস্তাবটি তুলেছিল পাকিস্তান। সদস্য দেশগুলোর মধ্যে কোন দেশ কোন পক্ষে অবস্থান নিয়েছে তার একটি চিত্র প্রকাশ করেছে আল-জাজিরা। এতে দেখা গেছে, পক্ষে ভোট দেওয়া রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, আর্জেন্টিনা এই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। আর ভোটদানে বিরত থাকা দেশগুলোর মধ্যে ভারত, ফ্রান্সের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

গত প্রায় ছয় মাস ধরে ইসরায়েলের নির্বিচার বোমাবর্ষণ ও হামলায় গাজায় অন্তত ৩৩ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহতদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু বলে দাবি করে আসছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।