চট্টগ্রাম: বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা করার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় কারাগারে থাকা ১৩ শিক্ষককে বিনা শর্তে মুক্তি দেওয়ার দাবিতে প্রতীক অনশন কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি।
রোববার সকাল ১০টা থেকে চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনশনে অংশ নেন শিক্ষকরা; পরে বিকেল ৩টার দিকে এ অনশন কর্মসূচি ভাঙ্গান একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি ও সাংবাদিক আবু মোমেন।
১৩ শিক্ষকের বিরুদ্ধে করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা প্রত্যাহার এবং মুক্তির দাবিতে এই কর্মসূচির আয়োজন করে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির চট্টগ্রাম আঞ্চলিক শাখা।
সংগঠনের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক শাখার সাধারণ সম্পাদক অঞ্চল চৌধুরী বলেন, কারাগারে যাওয়া ১৩ শিক্ষক মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়েছে। প্রশ্নপত্রের কোথাও বঙ্গবন্ধুর নাম ছিল না। এখন কারাবন্দি শিক্ষকদের পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। দ্রুত তাদের মুক্তি দেওয়া না হলে শিক্ষকেরা সারা দেশে কঠোর কর্মসূচি পালন করবেন।
গণঅনশনে অন্যান্যের মধ্যে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক শাখার সভাপতি সৈয়দ লকিতুল্লাহ, যুগ্ম সম্পাদক শিমুল মহাজন, সংগঠনের উত্তর জেলা শাখার সভাপতি রঞ্জিত নাথ ও সাধারণ সম্পাদক জানে আলম, দক্ষিণ জেলার সভাপতি ওসমান গণি ও সাধারণ সম্পাদক ছগির আহমেদ, নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কানুনগো প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক বিশ্বজিৎ চৌধুরী প্রমুখ।
প্রসঙ্গত গত বছরের ১৭ জুলাই নবম শ্রেণির অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ বিষয়ের সৃজনশীল অংশের একটি প্রশ্নে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহসভাপতি লিয়াকত আলীর কার্যক্রমকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তুলনা করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে।
গত বছরের ১৯ জুলাই বাঁশখালী উপজেলা সদর থেকে গ্রেপ্তার হন শিক্ষক দুকুল বড়ুয়া এবং বাঁশখালী মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও কালীপুর নাসেরা খাতুন বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাহেরুল ইসলাম। ওই রাতে বাঁশখালী থানার সেসময়ের এএসআই নুরুল আনোয়ার ৫৪ ধারায় একটি মামলা করেন। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে ১২৪ (ক) ধারা অনুসারে সেটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়।
এ মামলায় গত ১১ জুলাই হাই কোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন নেন ১৩ শিক্ষক। ওই জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তারা বাঁশখালী আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলেন। তবে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত ২৩ আগস্ট ১৩ শিক্ষককে কারাগারে পাঠায় বাঁশখালীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত।