ডিসি হিল পরিচ্ছন্ন রাখতে ১০০ ডাস্টবিন

চট্টগ্রাম : গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন চট্টগ্রামের ডিসি হিলকে পরিচ্ছন্ন রাখতে সেখানে ১০০ ডাস্টবিন তৈরি করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

‘আমার মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর অর্থায়নে এখানে সৌন্দর্যবর্ধনের উদ্যোগ নেয়া হবে’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ডিসি হিলকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। রাত নয়টা পর্যন্ত এখানে সবাই হাটাহাটি করতে পারবেন। এরপর এখানে কেউ থাকতে পারবেন না। এ প্রাঙ্গণের পবিত্রতা নষ্ট করা যাবে না।

গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী আজ শনিবার সকাল সাড়ে আটটায় চট্টগ্রাম মহানগরীর ডিসি হিল প্রাঙ্গণে ‘পরিচ্ছন্নতা নিজেরাই করি, কারও জন্য অপেক্ষা নয়’- শীর্ষক প্রচারাভিযানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। প্রাতভ্রমণ ও ইয়োগা অনুশীলনকারীদের সংগঠন ‘ইয়োগা প্রভাতী’ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

আলোচনা অনুষ্ঠানের আগে সবাইকে অবাক করে দিয়ে মন্ত্রী নিজেই হাতে ঝাড়ু তুলে নেন এবং সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত- এক ঘণ্টা ধরে ডিসি হিলের ময়লা-আবর্জনা সাফ করার কাজ করেন।

আশি ছুঁই ছুঁই বৃহত্তর চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা নিজের মন্ত্রী পরিচয় ভুলে এক ঘন্টার জন্য মিশে গিয়েছিলেন সাধারণ মানুষের কাতারে।

‘ইয়োগা প্রভাতী’র ৮১ জন সদস্য ছাড়াও এই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে অংশ নেন বেশ কিছু শ্রমিক। এসময় গায়ে টি-শার্ট, পরনে সাদা ট্রাউজার পরা মোশাররফ হোসেন নিজে কাজ করছিলেন এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন কীভাবে কোন কৌশলে সহজে পরিষ্কার করা যায়। ডিসি হিলের দক্ষিণপ্রান্তে থেকে কাজ শুরু করে উত্তরপ্রান্তে এসে শেষ হয়। পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের পুরো সময় মন্ত্রী ঝাড়ু হাতে ময়লা পরিষ্কারের কাজে ব্যস্ত ছিলেন।

পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শেষে আলোচনা পর্বে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমি চট্টগ্রাম এলেই সকালে হাঁটতে বের হই। কিন্তু ডিসি হিলে যখনই আসি- তখনই দেখছি অপরিচ্ছন্ন। এখানে যাতে ময়লা-আবর্জনা না হয় সে বিষয়ে সবাইকে উদ্যোগ নিতে হবে। এখানে বছরে শুধু তিনটি অনুষ্ঠান হতে পারে- পহেলা বৈশাখ, রবীন্দ্র জয়ন্তী ও নজরুল জয়ন্তী। এছাড়া আর কোনো অনুষ্ঠান হবে না।’

ডিসি হিল ঘিরে যেসব ফুলের দোকান আছে তারা ময়লা আবর্জনা সৃষ্টি করলে তাদের অন্য জায়গায় সরিয়ে নেয়া হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী দোকান মালিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘ডিসি হিল অপরিষ্কার রাখা যাবে না।

মন্ত্রী ঢাকার রমনা পার্কের উদাহরণ টেনে বলেন, ‘প্রথম প্রথম দেখতাম যেখানে সেখানে ময়লা, বাদামের খোসা, বোতল কতোকিছু পড়ে থাকতো। দিনভর বখাটে ছেলেদের আড্ডা হতো। আর বছরে সেখানে ৩৫টি মেলা হতো। ‘আমি সব বন্ধ করে দিয়েছি। এখন সেখানে কেবল পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান হয়।’

অন্যান্যের মধ্যে পরিচ্ছতা কর্মসূচির অন্যতম উদ্যোক্তা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. সুযত পাল অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

সবশেষে মন্ত্রী ডিসি হিলে চাপাফুল ও কাঠবাদামসহ পাঁচটি গাছের চারা রোপণ করেন।