চট্টগ্রাম: কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের মাধ্যমে জায়গা চিহ্নিত করে পুরো এলাকা নিরাপত্তা বেষ্টনির আওতায় নিয়ে আসার তাগিদ দিয়েছেন চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার মো. ইকবাল বাহার। মিয়ানমার নাগরিকদের চিহ্নিতকরণ সংক্রান্ত বিভাগীয় কমিটির সভায় তিনি এই মতামত দেন। বুধবার চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা শুধুমাত্র কক্সবাজারে নয়, পাশের বান্দরবানেও ৬০ থেকে ৬২ হাজার শরণার্থী অবস্থান নিয়েছে। তাই যত দ্রুত সম্ভব সরকারের ঘোষিত ২ হাজার একর জায়গা চিহ্নিত করে সেখানেই তাদের থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ তাদের চেহারা আর ভাষা স্থানীয়দের সঙ্গে প্রায়ই মিলে যায়। ফলে তারা স্থানীয়দের সঙ্গে মিশে বাইরে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান সরকারি কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সতর্ক করে বলেন, কক্সবাজার থেকে ছড়িয়ে পড়ার সময় বিভিন্ন জায়গা থেকে উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গাদের ধরা পড়েছে- বলা যাবে না। কক্সবাজার, টেকনাফ, উখিয়ার বাইরে পাওয়া গেলেই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নির্দিষ্ট ক্যাম্পে ফেরত পাঠাতে হবে। তবে এক্ষেত্রে কোনোভাবেই রোহিঙ্গা শরণার্থী ধরা পড়েছে এটা বলা যাবে না। এক্ষেত্রে বলতে হবে; উদ্ধার শব্দটি। কারণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। পুরো দেশ তাদের পাশে আছে। প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগ সারা বিশ্বে প্রশংসিত হচ্ছে।
সভায় বক্তারা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ যাতে সুষ্ঠুভাবে হয় ও কোনো শিশু যাতে বিনা চিকিৎসায় মারা না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।
এছাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দায়িত্ব পালনের জন্য ২৫০ জন অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স মোতায়েনের সিদ্ধান্ত হয়। পুলিশেল পাশাপাশি বিজিবি,র্ ুহিল;্যাব ও আনসার সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করবেন। পাঁচ জন ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষণিকভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় এবং বর্ডার লাইনে নিয়োজিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কক্সবাজার সদর, উখিয়া ও টেকনাফ খাদ্য বিভাগের গুদামগুলোতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য প্রাপ্ত অনুদানের মালামাল সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় চিকিৎসা সংক্রান্ত সার্বিক সহযোগিতার জন্য নতুন মেডিকেল টিম গঠন ও বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ এবং সকল রোহিঙ্গা শিশুকে টিকাদান কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসারও সিদ্ধান্ত হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি এস এম মনিরুজ্জামান, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) শংকর রঞ্জন সাহা, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) সৈয়দা সারোয়ার জাহান, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ।