চট্টগ্রাম: সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদে রুহুল আমিনের দায়িত্বপালনের এক বছরে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে রাজস্ব আদায় বেড়েছে এর আগের বছরের তুলনায় তিনগুণ বেশী।
ভূমি অফিসের দেওয়া তথ্য অনুসারে, ২০১৬ সালের ১৩ জুলাই চলতি বছরের ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৪ মাসে মোট রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৭ কোটি ৫৯ লাখ ১৯ হাজার ৩৩৯ টাকা; এই সময়ে দায়িত্ব পালন করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুহুল আমিন।
এর আগে ২০১৫ সালের ১১ মে থেকে ২০১৬ সালের ১৩ জুলাই ১৪ মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ৮ কোটি ১৮ লাখ ১৪ হাজার ১১২ টাকা।
সম্প্রতি পদোন্নতি পেয়ে সীতাকুণ্ডের সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদ ছেড়েছেন রুহুল আমিন। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার অফিসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যুক্ত আছেন ৩০তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের এই সদস্য।
সীতাকুণ্ড ভূমি অফিসে রাজস্ব আদায় বাড়াতে বেশকিছু পদক্ষেপ নেওয়ার কথা একুশে পত্রিকাকে জানিয়েছেন রুহুল আমিন; তিনি বলেন, ‘ভূমি অফিসের অবস্থান সম্পর্কে অনেক মানুষ আগে জানতো না। দায়িত্ব নেয়ার পর মহাসড়কের পাশে মূল ফটক বা তোরণ নির্মাণ করেছি। তাই সহজেই মানুষ ভূমি অফিস চিনছেন এবং অাগের তুলনায় বেশী মানুষ সেবা নিতে আসছেন।’
‘সুবিন্যস্ত ও পরিচ্ছন্নভাবে সকল রেকর্ড সংরক্ষণের জন্য রেকর্ড রুমকে আধুনিক ও গোছানো রেকর্ড রুম হিসেবে তৈরী করা হয়েছে। যাতে রেকর্ড চাওয়া মাত্রই পাওয়া যায়। এতে সেবার গতি বেড়েছে।’
রুহুল আমিন বলেন, ‘ভূমি সংক্রান্ত ধারণা মানুষের কম থাকার সুযোগে এ কাজে অসংখ্য দালালের সৃষ্টি হয়েছে। দায়িত্ব পালনকালে দালালদের পরিহার করে শুধুমাত্র আবেদনকারীকেই সেবা দিতে চেষ্টা করেছি। ভূমি বিষয়ক সেবা গ্রহণে মানুষকে সচেতন করার কাজ করেছি বিভিন্নভাবে।’
দায়িত্ব পালনকালে কার্যকর সেবা নিশ্চিত করার জন্য রোববার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত গণশুনানি করেন সীতাকুণ্ডের তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুহুল আমিন।
মুক্তিযোদ্ধা এবং প্রবাসীদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সেবা প্রদান করে প্রশংসাও কুড়ান মাদারীপুরের সন্তান রুহুল আমিন, ‘মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাঁদের জন্যই আজ আমি বাংলাদেশী। আমি আজ বিসিএস অফিসার। অন্যদিকে প্রবাসীরা রক্ত পানি করে এদেশে রেমিটেন্স পাঠায়। আপনজনদের সাথে সময় কাটাতে অল্প কিছুদিনের জন্য ওনারা দেশে আসেন। সেই সময়টা যাতে ভূমি অফিসে আসা-যাওয়া করেই ব্যয় না হয়। এসব তাড়না থেকেই এই ডেস্ক চালু করেছিলাম।’
সীতাকুণ্ড উপজেলার ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলোতে ল্যাপটপ, স্ক্যানার ও প্রিন্টার সরবরাহ করার উদ্যোগ নেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর রুহুল আমিন। একই সময়ে ভূমি অফিসে চালু করা হয় ‘ই-নামজারী’ সেবা। এতে খুব সহজে ও দ্রুত ডিজিটাল ভূমি সেবা পায় মানুষ।
২০১৫ সালের ১১ মে থেকে ২০১৬ সালের ১৩ জুলাই ১৪ মাসে মিচ কেইস নিষ্পত্তি হয়েছিল মাত্র ১৯৪টি। আর রুহুল আমিন দায়িত্ব নেয়ার পর ২০১৬ সালের ১৩ জুলাই চলতি বছরের ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৪ মাসে এক হাজার ২৬০টি মিচ কেইস নিষ্পত্তি হয়।
মিচ কেইস নিষ্পত্তি গত বছরের তুলনায় ৬ গুণের বেশী হওয়া প্রসঙ্গে রুহুল আমিন বলেন, ‘কর্মঘণ্টা শেষ হলেও কাজ করেছি। ৯টা-৫টা অফিসের মধ্যে এটা সম্ভব নয়। তাই শুক্র-শনির পাশাপাশি রাত ২-৩টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়েছে।’