চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার তালসরা দরবার শরিফের টাকা লুটের মামলায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে চার র্যাব সদস্যসহ সাতজনের বিচার শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার চট্টগ্রামের পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ নুরে আলম ভুঁইয়ার আদালতে এই অভিযোগ গঠন হয়।
চট্টগ্রামের জেলা পিপি আ ক ম সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, তালসরা দরবার শরিফের টাকা লুটের মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত সাত আসামি মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করেছিলেন। মঙ্গলবার অভিযোগ গঠনের সময় জামিনে থাকা সাত আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। সবার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ২৩ অক্টোবর দিন ধার্য করেছে।
আসামিরা হলেন- র্যাব-৭ চট্টগ্রামের তৎকালীন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (চাকরিচ্যুত) জুলফিকার আলী মজুমদার, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট (বাধ্যতামূলক ছুটিতে) শেখ মাহমুদুল হাসান, র্যাব-৭ এর সাবেক ডিএডি আবুল বাশার, এসআই তরুণ কুমার বসু, র্যাবের তিন সোর্স দিদারুল আলম ওরফে দিদার, আনোয়ার মিয়া ও মানব বড়–য়া।
২০১১ সালের ৪ নভেম্বর রাতে তালসরা দরবারে গিয়ে র্যাব সদস্যরা তল্লাশির নামে ২ কোটি ৭ হাজার টাকা লুটের অভিযোগে ২০১২ সালের ১৩ মার্চ আনোয়ারা থানায় র্যাব সদস্যসহ ১২ জনেরর বিরুদ্ধে মামলাটি হয়। তালসরা দরবারের পীরের গাড়িচালক মো. ইদ্রিস মামলাটি দায়ের করেন। এতে অভিযোগ করা হয়, র্যাবের তৎকালীন অধিনায়ক জুলফিকার মজুমদারের নেতৃত্বে র্যাবের একটি দল অভিযান চালিয়ে দরবার শরিফে রাখা আলমারি ভেঙে দুই কোটি সাত হাজার টাকা নিয়ে যায়। ওই রাতে দরবার শরিফ থেকে মিয়ানমারের পাঁচ নাগরিককে র্যাব সদস্যরা আটক করে। তাদের থানায় হস্তান্তর করা হলেও টাকার বিষয়ে কোনো কিছুই উল্লেখ করেনি র্যাব। এ ঘটনা পরে জানাজানির পর র্যাব সদর দপ্তর থেকে করা তদন্ত কমিটির প্রাথমিক তদন্তে টাকা লুটের ঘটনায় র্যাব সদস্যদের জড়িত থাকার বিষয়টি ধরা পড়ে।
এরপর ২০১২ সালের ২৬ জুলাই জুলফিকারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন আনোয়ারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবদুস সামাদ। ২০১২ সালেই মামলা বাতিল চেয়ে হাই কোর্টে আবেদন করেন জুলফিকার ও মাহমুদুল হাসান। ২০১৫ সালের ১১ মার্চ জুলফিকারের করা রুল আবেদনটি হাই কোর্টে বাতিল হয়ে যায়। সর্বশেষ গত বছরের ১৮ অগাস্ট মাহমুদুল হাসানের পক্ষে আবেদনটি না চালানোর কথা জানানো হলে সেটিও বাতিল করে দেয় হাই কোর্ট। এরপর সংশ্লিষ্ট জিআরও শাখায় প্রায় চার বছর আগে জমা পড়া অভিযোগপত্রটি আদালতের নির্দেশে বিচারিক আদালতে আসে। সাবেক র্যাব কর্মকর্তা জুলফিকার আলী মজুমদারের গাড়িচালক ও দেহরক্ষী ডাকাতির বর্ণনা দিয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়া অন্য তিনজন সাক্ষীও জবানবন্দি দিয়েছেন।