চট্টগ্রাম: মাত্র ৫০০ টাকার জন্য স্বজনদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হলেন প্রতিবন্ধী তৈয়ব আলী (৪৫)।
নির্মম এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত স্ত্রী কোহিনুর বেগম (৪২), শ্যালিকা জাহানারা বেগম (৩৮), ছেলে সোহেল (২০) ও মেয়ে বৃষ্টি আকতার (১৫)।
ঘটনাটি ঘটেছে নগরীর মাদারবাড়ি টং ফকির মাজার এলাকার শাহ আলম মঞ্জিলের চতুর্থ তলায় শুক্রবার রাতে। এরপর শনিবার রাত ৯টায় এক বন্ধুসহ রশিদ বিল্ডিং এলাকার আবদুর রশিদ সিটি বালিকা বিদ্যালয়ের সামনের খালে লাশ ফেলতে গিয়ে ধরা পড়ে এক রিকশাওয়ালাসহ সোহেল। পরে বাসায় অভিযান চালিয়ে তৈয়ব আলীর স্ত্রী ও শ্যালিকাকে আটক করা হয়।
পুলিশ সূত্র জানায়, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে সোহেল বাসায় ঢুকে দেখে তার বাবা মায়ের কাছে ৫০০ টাকা চাইছে। মা টাকা নেই বললে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। রাত দেড়টা পর্যন্ত এ বিষয়ে ঝগড়া চলতে থাকে। ১টা ৪০ মিনিটের দিকে ঝগড়ার এক পর্যায়ে সোহেলের ক্রিকেট খেলার ব্যাট দিয়ে তার খালা জাহানারা তৈয়ব আলী ঘাড়ের বাম পাশে সজোড়ে আঘাত করে। এতে সাথে সাথে তৈয়ব আলী মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে ঘারের ডান পাশে আবার আঘাত করা হয়। এরপর সোহেরের মা এবং খালা দুজনেই তৈয়ব আলীর গলা চেপে ধরে। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে সোহেল বালিশ দিয়ে তার বাবার মুখ চেপে ধরে। ৫ মিনিটের মত চেপে ধরে রেখে সে বাবার মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর আরো নিশ্চিত হওয়ার জন্য কাঁচি দিয়ে ৪০ থেকে ৫০টি আঘাত করে পুরো শরীর ছিদ্র করে দেয়া হয়। তৈয়ব আলীর স্ত্রী দড়ি দিয়ে দুই পা বেঁধে ফেলে, সোহেলের বোন বৃষ্টি এ সময় বাবার দুই হাত চেপে ধরে রাখে। সোহেল হাতের রগ এবং নিঃশ্বাস পরীক্ষা করে মৃত্যুর ব্যাপারে নিশ্চিত হয়। এরপর সবাই মিলে চটের বস্তায় তৈয়ব আলীর লাশ ভরে বারান্দায় রেখে দেয়। শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সোহেল তার এক বন্ধুর পরামর্শে লাশভর্তি বস্তাটা নিয়ে রশিদ বিল্ডিং এলাকায় যায়। সেখানে খালে লাশ ফেলতে গিয়ে রিকশাওয়ালাসহ ধরা পড়ে সোহেল।
সদরঘাট থানার ওসি মর্জিনা আক্তার বলেন, স্ত্রী, শ্য্যলিকা, ছেলে ও মেয়ে ক্রিকেট প্রথমে ব্যাট দিয়ে আঘাত করে, পরে বালিশ চাপা দিয়ে এবং সর্বশেষ কাঁচি দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তৈয়ব আলীর মৃত্যু নিশ্চিত করে। জিজ্ঞাসাবাদে সোহেল জানিয়েছে, মাত্র ৫০০ টাকার জন্য বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা।