কক্সবাজার: রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গা নির্মূলে পরিকল্পনা নিয়েছে মিয়ানমার সরকার। একজন রোহিঙ্গাও যাতে অবস্থান করতে না পারেন এমন মিশনে কাজ করছে তারা। রোহিঙ্গার উপর চলমান এই আক্রমণের ঘটনা তারই প্রমাণ বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
আইন ও শালিসী কেন্দ্রের সাবেক কর্মকর্তা নুর খান জানান, মিয়ানমার বাহিনী গণহত্যা শুরু করেছে। এরা রোহিঙ্গা শূন্য রাখাইন করার মিশন নিয়ে কাজ করছে। এতে নতুন করে ৫ থেকে ৬ লাখ নতুন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। যা দেশের জন্যও সমস্যা।
এই মানবাধিকার নেত্রীর মতে, এ মূহুর্তে আন্তর্জাতিক মহলকে সাথে নিয়ে এর সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে বাংলাদেশকে। না হলে রোহিঙ্গাদের সাথে সাথে কক্সবাজার-চট্টগ্রামের মানুষও ভোগান্তি এবং দুর্ভোগে পড়তে পারে।
মিয়ানমারে চলমান সহিংসতার ঘটনার বিষয়ে কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী বলেন, শৈশবকাল থেকে দেখছি আমাদের পাশের আরাকান অঞ্চল জ্বলছে। সেখান থেকে নির্যাতন-নিপীড়নে পালিয়ে আসছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। এখন বৃদ্ধ বয়সেও এসে দেখছি সেখানে বাংলা ভাষাবাসী রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন চলছে। শুধু মুসলিমদের উপর নয়, চাটগাঁইয়া বাংলা ভাষাবাসী সেখানকার হিন্দু বাসিন্দাদের উপরও নৃশংসতা চালানো হচ্ছে।
সীমান্ত এলাকা উখিয়ার এই বাসিন্দা আরও বলেন, বর্তমানে নির্যাতনের মাত্রা বর্বরতার চূড়ান্ত সীমা অতিক্রম করেছে। মানুষকে বিভৎস নির্যাতনে, পুড়িয়ে হত্যা করা হচ্ছে। নারীদের উপরও চূড়ান্ত বর্বরতা চালানো হচ্ছে। বাদ যাচ্ছে না শিশুরাও। এমনকি দুধের শিশুদের উপরও চালানো হচ্ছে এমন নির্যাতন, যা অতীতের সকল বর্বরতাকে হার মানিয়েছে। এ কারণে লাখ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে প্রাণভয়ে পালিয়ে আসছে বাংলাদেশে। এসব মানুষকে আমরা মানবিক কারণে আশ্রয় দিয়ে চলেছি আর বর্বর জাতি বার্মিজদের নির্যাতন দেখে শুধুই চোখের জল ফেলছি।
তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার আগে আমার যখন শৈশবকাল, তখন কয়েক লাখ রোহিঙ্গা এদেশে পালিয়ে এসেছেন। যারা আর ফিরে যাননি। তারা এদেশের জনগোষ্ঠীর সাথে মিশে গিয়ে এখানেই স্থায়ীভাবে রয়ে গেছে। অনেকেই জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হচ্ছে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদ দখল করে চলেছে। স্বাধীনতার আগে থেকেই লাখ লাখ রোহিঙ্গা এদেশে পালিয়ে এসে স্থায়ীভাবে আবাস গড়লেও আরাকান অঞ্চল শান্ত হয়নি। বরং ধীরে ধীরে আরাকান থেকে পালিয়ে এসে রোহিঙ্গারা এদেশের মানুষের সাথে মিশে যাচ্ছে আর তাদের জাতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে।
এভাবে ধীরে ধীরে মিয়ানমার রোহিঙ্গা নির্মূলে পরিকল্পনা নিয়েছে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।