চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম নগরীতে ড্রাম কেটে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধারের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত যুবলীগ নামধারী ক্যাডার অমিত মুহুরী গ্রেফতার হয়েছেন; শনিবার রাতে কুমিল্লা থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
অমিত মুহুরী নগরের সিআরবির জোড়া খুনের মামলার আসামি। চট্টগ্রামে বহু সন্ত্রাসের জন্ম দেয়া এই সন্ত্রাসী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ অর্থ বিষয়ক সম্পাদক হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে পরিচিত।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ- কমিশনার (বন্দর-পশ্চিম) মো. শহীদুল্লাহ বলেন, কুমিল্লা থেকে অমিতকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রোববার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানানো হবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম ও কুমিল্লায় পৃথক অভিযান চালিয়ে হত্যায় জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- কুমিল্লার নাঙ্গলকোর্ট উপজেলার শ্রীরামপুর এলাকার হুমায়ুন কবির মজুমদারের ছেলে মো. ইমাম হোসেন মজুমদার ওরফে শিশির (২৭) ও চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার খাগরিয়া ইউনিয়নের ভোরবাজার এলাকার মৃত আশরাফ মিয়ার ছেলে মো. শফিকুর রহমান ওরফে শফি (৪৬)।
গত ১৩ আগস্ট দুপুরে এনায়েত বাজার মোড়ের রানীর দিঘীতে ভাসতে থাকা ড্রামটি উদ্ধারের করে পুলিশ। অর্ধেক কাটা ড্রামটি সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করা ছিল। পরে ঢালাই কেটে একটি গলিত লাশ পাওয়া যায়। ঘটনায় জড়িত দুইজনকে গ্রেফতারের পর পুলিশ জানতে পারে, নিহত যুবক হলেন রাউজান পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের মো. রেজাউল করিমের ছেলে ইমরানুল করিম ইমন (২৫)।
ঘটনায় জড়িত দুইজনকে গ্রেফতারের পর আমরা চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় পুলিশ। তারা পুলিশকে নিহতের পরিচয় জানিয়েছে। এমনকি কেন, কিভাবে হত্যা করা হয়েছে সেসব তথ্যও দিয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কোতোয়ালী জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, খুনের শিকার ইমন ছিল অমিতের বন্ধু। স্ত্রীর সাথে ইমনের পরকিয়া সম্পর্ক আছে- এমন সন্দেহে অমিত এ ঘটনা ঘটিয়েছে। পূর্ব পরিকল্পনানুযায়ী ইমনকে নন্দনকাননের নিজের বাসায় ডেকে নেয় অমিত মুহুরী। এরপর গ্রেফতার দুইজনের সহায়তায় ইমনকে ছুরিকাঘাত ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। ৯ আগস্ট ভোর ৫টা থেকে ৬টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পরবর্তীতে লাশ গুম ও ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য একটি অর্ধ ড্রামে ইমনের লাশ ভরে চুন ও এসিড ঢেলে ড্রামের উপরে সিমেন্ট বালু দিয়ে ঢালাই করে দেয়। এরপর সেটি বাসার মধ্যে রেখে দেয় এবং পরবর্র্তীতে ভ্যান গাড়ী যোগে ১২ আগস্ট গভীর রাতে রানীর দিঘীর পাড়ে ড্রামে ভর্তি অবস্থায় লাশ ফেলে দেয়।
এ ঘটনায় গ্রেফতার শিশির গত শুক্রবার আদালতে খুনের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করে জবানবন্দি দিয়েছে; জবানবন্দিতে সে জানিয়ে, অমিত মুহুরী ও তার স্ত্রী চৈতি মিলে ইমনকে খুন করে। পরে শিশিরসহ কয়েকজন বন্ধুর সহযোগিতায় মরদেহ গুম করার চেষ্টা করে।