চট্টগ্রাম: শারীরিক নির্যাতনের মাধ্যমে স্ত্রীর গর্ভের সন্তানের মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগে ক্রিকেটার মো. মেহেদী হাসান মারুফের (৩০) বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের একটি আদালতে মামলা হয়েছে। রোববার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আবু সালেম মো.নোমানের আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন মারুফের স্ত্রী তামান্না বিনতে আজাদ (৩০)।
মামলার বাদি তামান্না বিনতে আজাদ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সরঞ্জাম বিভাগের কর্মকর্তা। মামলার অভিযোগে ক্রিকেটার মারুফের ঠিকানা ক্রিকেট একাডেমি ভবন, মিরপুর ক্রিকেট স্টেডিয়াম, মিরপুর-১, ঢাকা উল্লেখ আছে। ঘটনাস্থল ও বাসা চট্টগ্রাম নগরীর বাটালি রোডের মুনিরা ভিলা উল্লেখ আছে।
বাদির আইনজীবী ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, দন্ডবিধির ৩১৩ ধারায় দায়ের করা মামলাটি আদালত গ্রহণ করেছেন। অভিযোগ তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন। হাসপাতাল থেকে গর্ভপাতের প্রমাণ সংগ্রহ করে আদালতে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন সংস্থাটিকে নির্দেশ দেন আদালত।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০০৯ সালের ২৯ নভেম্বর মেহেদী ও তামান্নার বিয়ে হয়। ২০১৫ সালের ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তামান্নার বাবার বাসায় বসবাস করেন মেহেদী। সেখানে অশান্তি শুরু হলে ২০১৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর মেহেদী ও তামান্না আলাদা বাসা নিয়ে বসবাস শুরু করেন। এর মধ্যে মেহেদীর সঙ্গে আরেক নারীর সম্পর্কের বিষয় জানাজানি হলে সংসারে ঝগড়াবিবাদ শুরু হয়। এরপর তামান্নাকে বাসা ছেড়ে যেতে বলে মেহেদী। কাউকে এসব জানালে তালাক দেওয়ার হুমকি দেয়া হয়। একদিন একটি হোটেলে গিয়ে মেহেদীকে অন্য একটি মেয়ের সাথে দেখতে পান তামান্না। পরে পারিবারিকভাবে ক্ষমা চেয়ে এই ধরনের ঘটনা আর ঘটাবে না মর্মে অঙ্গীকার করে। ইতিমধ্যে সন্তানসম্ভবা হন তামান্না। মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি ভ্রুণ হত্যা করার চেষ্টা চালায় মেহেদী।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে মেহেদী অন্তঃসত্তা তামান্নাকে বেপরোয়াভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। একপর্যায়ে রাত ১টার দিকে পেটে লাথি দিলে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। দ্রুত তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে নিয়ে গেলে চিকিৎসক গর্ভের সন্তানের মৃত্যু হয়েছে বলে জানায়। এই ঘটনায় তামান্না তখনই মামলা করতে চাইলে মেহেদীর পরিবার অনুরোধ করায় বিরত রাখে। কিন্তু পরবর্তীতে তামান্নার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়ে তাকে হুমকি-ধমকি দিতে থাকায় তিনি মামলা দায়ের করেছেন।
