সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

৯ মাসে শত কোটি টাকার সরঞ্জাম এসেছে পুলিশের

প্রকাশিতঃ ২০ অগাস্ট ২০১৭ | ৬:১৭ অপরাহ্ন

শরীফুল রুকন : বন্দর থেকে পণ্য ছাড় করাতে প্রয়োজন হয় ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্সির। আমদানি করা সরঞ্জাম ছাড় করাতে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্সির কাছে ধরনা দিতে হত পুলিশকেও। কিন্তু এখন পুলিশই বন্দর ও কাস্টমসের কাজ সম্পন্ন করছে। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স নামে নিজেরাই পেয়েছে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট লাইসেন্স।

পুলিশ সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দর হতে ছাড়করণের জন্য পুলিশকে গত বছরের ১৭ নভেম্বর সিএন্ডএফ এজেন্ট লাইসেন্স দেয় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। এরপর সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন শেষে প্রথমবারের মতো গত বছরের ১ ডিসেম্বর কাস্টম হাউসে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে পুলিশ। কার্যক্রম শুরুর পর রোববার পর্যন্ত পণ্য শুল্কায়ন শেষে ৩১টি আমদানি চালান চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছাড়করণ করতে সক্ষম হয় পুলিশ। এ পর্যন্ত প্রায় ১০০ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকার সরঞ্জামের চালান নিজেদের সিঅ্যান্ডএফ লাইসেন্স দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালাস করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীটি।

আমদানি করা সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে- এপিসি, ক্রাউড কন্ট্রোল বেহিকেলস্, এ্যাম্বুলেন্স, জিপ, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, আরচ্ওয়ে মেটাল ডিটেক্টও, ওয়াটার ট্যাঙ্কার, ওয়াটার কেনন, রেকার, বেগেজ স্কেনার, প্রিজনারস ভ্যান, মাইক্রোবাস, ফুয়েল ট্যাঙ্কার, মোটর সাইকেল, ফিঙ্গার প্রিন্ট স্ক্যানার, অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, লাইসেন্স পাওয়া আগে বন্দর থেকে চারদিনের মধ্যে পণ্য খালাস করতে পারতো না পুলিশ। এতে বন্দরের ও শিপিং এজেন্টের কন্টিনারের অতিরিক্ত চার্জ বাবদ অর্থ ব্যয় করতে হতো পুলিশকে। ফলে সিঅ্যান্ডএফ বাবদ পুলিশের বছরে কয়েক কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ হতো। এখন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পণ্য খালাস হচ্ছে। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্সি বাবদ খরচও নেই। এরইমধ্যে ৩১টি আমদানি চালানে পুলিশের কমপক্ষে ১৬ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে।

পুলিশের গতানুগতিক কাজের বাইরে নতুন এ উদ্যোগে মাঠ পর্যায়ে যুক্ত আছেন সার্জেন্ট মো. আমিনুল ইসলাম; পুলিশের সিঅ্যান্ডএফ কার্যক্রমে নিয়োজিত কাস্টম ও জেটি সরকার অফিসার হিসেবে কাজ করছেন তিনি। পেশাদারিত্বের সাথে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে কাজ করায় গত ফেব্রুয়ারি মাসে তাকে পুরস্কৃত করেন সিএমপি কমিশনার মো. ইকবাল বাহার।

এ প্রসঙ্গে সার্জেন্ট মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, অতি দ্রুততার সাথে বিল অব এন্ট্রি প্রস্তুত করে শুল্কায়ন প্রক্রিয়া সম্পাদন করে আসছি। শুল্কায়ন প্রক্রিয়া ও বন্দরে পণ্য খালাস কার্যক্রমে জটিলতা অনেকটাই কমে গেছে।

তিনি আরও বলেন, রোববার সর্বশেষ চালান খালাস করেছি আমরা। ওই চালানে টিয়ার গ্যাস ও হ্যান্ড গ্রেনেড ছিল। এসব সরঞ্জাম পুলিশ প্রহরায় ঢাকায় পাঠিয়ে দিয়েছি। এভাবে পণ্যের চালান খালাস করে পুলিশের সংশ্লিষ্ট ইউনিটে দ্রততম সময়ের মধ্যে প্রেরণ করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (বন্দর) হারুন অর রশিদ হাজারী বলেন, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট লাইসেন্স পাওয়ার আগে বিভিন্ন বেসরকারী এজেন্সির মাধ্যমে সরঞ্জাম আমদানি করে আসছিল পুলিশ। এক্ষেত্রে তাদেরকে নির্দিষ্ট কমিশন দিতে হতো। তবে সে সময় সরঞ্জাম খালাসে ধীরগতি ছিল। এখন পুলিশের নিজস্ব জনবল দিয়ে বন্দর ও কাস্টমসের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে। নিজেরাই লাইসেন্স পাওয়ার পর চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য খালাসে গতি এসেছে।