চট্টগ্রাম: পুলিশের তালিকাভুক্ত অস্ত্র ব্যবসায়ী তিনি। ধরা পড়েছেন পাকিস্তানে তৈরী অস্ত্র নিয়ে। এখন কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পেতে চান। এজন্য আদালতের সহানুভূতি পাওয়ার চেষ্টায় ‘মানসিক রোগী’ সাজার চেষ্টা করছেন এই আসামি। তার নাম- গোলজার আলম।
পুলিশের ভাষ্য মতে, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের তৈরীকৃত অস্ত্র ব্যবসায়ীর তালিকা ও ডবলমুরিং থানার সন্ত্রাসী তালিকায় গোলজার আলমের নাম আছে। অস্ত্রধারী এই সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে ডবলমুরিং থানায় ৮টি মামলা আছে। একটি মামলা আছে কোতোয়ালী থানায়।
গত ৭ মার্চ চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিং থানার দাইয়া পাড়া এলাকা থেকে পাকিস্তানে তৈরী অস্ত্র ও পাঁচ রাউন্ড কার্তুজসহ গ্রেফতার হন গোলজার আলম। তাকে গ্রেফতারের পর ১৩ মার্চ পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করে তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ডবলমুরিং থানার এসআই আল-আমীন। এরপর একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এরপর এই মামলায় ২৮ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। সেখান অস্ত্রসহ আটক গোলজারকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।
গোলজারের শারীরিক অসুস্থতার কারণে প্রতিবেদন চেয়ে গত ৪ জুন আদালতে আবেদন করা হয়। আদালতের নির্দেশে গত ১০ জুলাই প্রতিবেদন জমা দেয় চট্টগ্রাম কারাগার কর্তৃপক্ষ; সেখানে উল্লেখ করা হয়, ‘বন্দি গোলজার আলমকে গত ৫ জুলাই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মানসিক রোগ বিভাগে প্রেরণ করা হয়েছিল। মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ কর্তৃক তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে। চিকিৎসা অব্যাহত আছে। বর্তমানে সে মোটামুটি সুস্থ।’
এদিকে গোলজারের সর্বশেষ অস্ত্র মামলায় নথিভুক্ত করা হয়েছে চিকিৎসকের একটি চিকিৎসাপত্র; এপিক হেলথ কেয়ার লিমিটেড একটি নামের ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্যাডে এটি দিয়েছেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মানসিক রোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মহিউদ্দিন এ. শিকদার।
আদালত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চিকিৎসকের পরামর্শপত্র আদালতের নজরে এনে সহানুভূতি পাওয়ার চেষ্টা করছেন ভয়ংকর এই সন্ত্রাসী।
গোলজারের আইনজীবি শওগাতুল আনোয়ার খান বলেন, সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে গোলজার আলমকে মামলায় সম্পৃক্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা। জামিন দেওয়ার এখতিয়ার আদালতের। তাই আমরা আদালতে এসব তুলে ধরে জামিন নেওয়ার চেষ্টায় আছি।
ডবলমুরিং থানার এসআই আল-আমীন বলেন, গোলজার একজন পেশাদার অপরাধী। সে জামিনে মুক্তি পেলে চাঁদাবাজি ও অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা বেড়ে যাবে। আগ্রাবাদ এলাকায় অপরাধজগতের নিয়ন্ত্রক সে। তার জামিনের বিরোধীতা করেছি আদালতে।
চট্টগ্রাম মহানগর পিপি মো. ফখরুদ্দীন চৌধুরী বলেন, গোলজারের জামিনের জন্য আগে একবার আবেদন করা হলে আমি আপত্তি জানিয়েছিলাম। গুরুত্বর অপরাধের এই আসামি জামিনে মুক্তি পেলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। তাই তার জামিন ঠেকানোর জন্য আমরা সতর্ক আছি।