দিয়াজ হত্যা মামলায় চবির সাবেক সভাপতি জামশেদকে তুলে নেয়ার গুজব!

চট্টগ্রাম: কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ ইরফান চৌধুরী হত্যা মামলায় অভিযুক্ত আবুল মনসুর জামশেদকে তার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় রেলগেইট এলাকার বাসা থেকে পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে বলে গুজব উঠেছে।

আবুল মনসুর জামশেদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি।

ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে রোববার রাত থেকে গুজবের ডালপালা ছড়িয়েছে। চাওর হয়েছে দিয়াজ হত্যা মামলায় ২ নম্বর অভিযুক্ত জামশেদকে রাত ২ টায় সাদা পোশাকের পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে। কখনো বলা হচ্ছে হাটহাজারির বড় দিঘীর পাড়ের বাসা থেকে সিআইডি পুলিশ নিয়ে গেছে জামশেদকে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও পুলিশের সংশ্লিষ্ট লোকজন বলেছেন এ ধরনের কাউকে তুলে আনা বা আটকের ঘটনা তাদের জানা নেই।

সিআইডির চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, ‘দিয়াজের মামলার বিষয়ে আবুল মনসুর জামশেদকে আমাদের কোন টিম ধরেনি। এটা গুজব হবে। বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য এটা কেউ করছে হয়তো।’

দিয়াজের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিআইডির হুমায়ুন কবির সরকার বলেন, ‘দিয়াজের মৃত্যুর ঘটনায় সিআর মামলা হয়েছে। আদালত তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছে। যতদ্রুত সম্ভব আমি সেটা করবো। কিন্তু বর্তমান অবস্থায় অভিযুক্তদের আটকের যে বিষয়টি আপনি (প্রতিবেদক) বলছেন, সেটা হওয়ার সুযোগ নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘তদন্তে যথাযথ সাক্ষ্য-প্রমাণ পেলে আদালতসহ সংশ্লিষ্টদের অনুমতি সাপেক্ষে কেবল অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা সম্ভব। এখন তদন্তের প্রয়োজনে বড়জোর তাদের সাথে আমি কথা বলতে পারি। এর বেশী কিছু না।’

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর মামলাটি কোন দিকে যাবে সেটা স্পষ্ট হবে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ আসলে এফআইআর হিসেবে রেকর্ড করতে আদালত নির্দেশ দিতে পারে।

এদিকে জামশেদের ছোটভাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের প্রাক্তন সহ সভাপতি মোস্তফা সাইদুল ইসলাম বলেন, বড়ভাই (জামশেদ) ভাল আছেন। একটা কাজে বর্তমানে কক্সবাজার অবস্থান করছেন। তার সাথে মোবাইল ফোনে আমাদের নিয়মিত কথা হচ্ছে।’

ইচ্ছা করলে আপনিও (প্রতিবেদক) তার সাথে কথা বলতে পারেন বলেই ফোন নাম্বার সরবরাহ করেন মোস্তফা সাইদুল ইসলাম; তবে সেই নাম্বারটিতে রিং হয়, কিন্তু কেউ রিসিভ করে না।

এর আগে গত বছরের ২০ নভেম্বরে দিয়াজের লাশ উদ্ধারের পর দিয়াজের পরিবার দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণকাজের দরপত্র নিয়ে বিরোধের জেরে তাকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথম ময়নাতদন্তের পর ২৩ নভেম্বর চিকিৎসকরা ‘আত্মহত্যা’র কথা বলেন; ওই ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে তিনজন ফরেনসিক চিকিৎসকের স্বাক্ষর ছিল।

২৪ নভেম্বর দিয়াজের মা জাহেদা আমিন বাদী হয়ে ১০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। পরে আদালতের নির্দেশে দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য দিয়াজের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই ছাত্রলীগ নেতার দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়ার চিকিৎসকের বরাত দিয়ে গত ৩০ জুলাই সিআইডি জানায়, দিয়াজের মৃত্যু শ্বাসরোধজনিত হত্যাকান্ড।